বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হামলায় ভোটে উৎকণ্ঠা

খাগড়াছড়িতে একজনকে হত্যা, দিনাজপুরে প্রার্থীকে কুপিয়ে আহত, প্রচারকালে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও চিফ হুইপের ওপর হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

হামলায় ভোটে উৎকণ্ঠা

পটুয়াখালীতে গতকাল সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর গাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

পৌরসভাগুলোর নির্বাচনের বাকি আর মাত্র সাত দিন। এর আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে হয়েছে হত্যা, হামলা, ভাঙচুর, গুলি ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা। সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় কৃষক দলের এক স্থানীয় নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রাতে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে দিনাজপুরের বিরামপুর পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়রকে। প্রচারাভিযানে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। পটুয়াখালীতে হামলা হয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরীর গাড়িবহরে। সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক হামলার শিকার হয়েছেন কুমিল্লায়। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের সমর্থকদের সংঘাত হয়েছে। বেশ কিছু পৌরসভার মেয়র প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ নিয়ে উত্কণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাও অব্যাহত আছে। এ কারণে ডজনখানেক প্রার্থীকে শোকজ ও জরিমানা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালত।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, জেলার মাটিরাঙা পৌরসভার বিএনপি প্রার্থী মো. বাদশাহ মিয়ার প্রচারণা চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় গ্রামে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছেন উপজেলা কৃষক দলের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম (৫০)। রাত ৮টায় উপজেলার আদর্শপাড়ায় নিজ বাড়ির কাছাকাছি নির্জন স্থানে দুর্বৃত্তরা নজরুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। প্রতিবেশী রবিউল সরদার তাকে উদ্ধার করে মাটিরাঙা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করেন। চিকিত্সক সৌরভ দত্ত জানান, নজরুল ইসলামকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। জেলা বিএনপির নেতা নিপু আহমেদ বলেছেন, প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছেন নজরুল ইসলাম। মাটিরাঙা থানার ওসি শাহাদাত হোসেন টিটু জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, বিরামপুর পৌরসভার বিএনপি প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আজাদুল ইসলামকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে নির্বাচনী প্রচার শেষে নিজ বাসায় ফেরার পথে পৌর এলাকার আনসার-ভিডিপি মাঠের দক্ষিণ পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিত্সক মশিউর রহমান বলেন, আজাদুল ইসলামের হাত, মাথা ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। চিকিত্সা চলছে। আজাদুলের ওপর হামলার খবর পেয়ে তার সমর্থক ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় ভিড় করেন। সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পৌর বিএনপির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেছেন, বিরামপুরের রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত করার জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, কলাপাড়া পৌরসভায় বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থীর কর্মী বৈঠকে অংশ নিতে যাওয়ার সময় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর গাড়িবহরে হামলা করেন প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর নেতা-কর্মীরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলাপাড়া পৌর শহরের রহমতপুরে এ হামলা হয়। এ সময় আলতাফ হোসেন চৌধুরীর স্ত্রী বেগম সুরাইয়া চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবর রহমান টোটন, অর্থ সম্পাদক দুলাল মাতবর, যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলামসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। সংবাদ সংগ্রহের জন্য গাড়িবহরের সঙ্গে থাকা সংবাদকর্মীদের মাইক্রোবাসেও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় বৈশাখী টিভির জেলা প্রতিনিধি আবদুস সালাম, যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি জাকারিয়া হূদয়, কালের কণ্ঠের পটুয়াখালী প্রতিনিধি এমরান হাসান সোহেলসহ সাংবাদিকরাও লাঞ্ছিত হন। আহত স্থানীয় বিএনপি নেতা মজিবর রহমান টোটন জানান, সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বিপুল হাওলাদারের সমর্থক ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডাররা। তবে দায় অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিপুল হাওলাদার। তার দাবি, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে লাঞ্ছিত সাংবাদিকরা বলছেন, বিপুল হাওলাদারের সংবাদ সম্মেলনের সময়ও তার পাশে ছিলেন হামলাকারী ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীরা। ঘটনার পর থেকেই শহরে আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, চান্দিনা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তুলাতুলি এলাকায় গতকাল দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুকের জনসংযোগে হামলা চালিয়েছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ সময় জাকির হোসেন নামের এক সাংবাদিককে আহত করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। জয়নুল আবদিন ফারুক সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জহিরুল মুন্সি ও পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি মোজাম্মেলের নেতৃত্বে ৮-১০টি মোটরসাইকেল নিয়ে সন্ত্রাসীরা এসে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ঠেকাতে গেলে তাদের মারধর করা হয়। অন্যদিকে, জেলার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সোমবারের সংঘর্ষ, গুলিবিনিময় ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গতকাল সকালে তিনটি মামলা হয়েছে। চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই শংকর তালুকদার বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দেড়শ’ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। বাকি মামলা দুটি করেন স্থানীয় আলকরা ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল হোসেন বাচ্চু ও কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল হালিম। এ তিনটি মামলারই প্রধান আসামি চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও উপজেলা যুবলীগ সদস্য ইমাম হোসেন পাটোয়ারী। পুলিশের কাজে বাধা, গাড়ি-দোকানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। জেলার অন্য পৌরসভা চান্দিনায় গতকাল এক কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে প্রচারকালে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার সময় আরমান হোসেন নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয়রা। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে আদালত ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বেলকুচি পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী হাজী জামাল উদ্দিনের পক্ষে গণসংযোগ করায় গতকাল সন্ধ্যায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীরা বেলকুচি উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম ও কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের সদস্য গোলাম মওলা খান বাবলুকে বেধড়ক মারধর করেন। সন্ধ্যার পর উপজেলার মুকুন্দগাতী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। দৈনিক অর্থনীতি প্রতিদিনের সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি রেজাউলকে গুরুতর অবস্থায় ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বাজিতপুর পৌরসভা নির্বাচনে সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন দুজন মেয়র প্রার্থী। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে মাঠে-ময়দানে সংসদ সদস্য প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন এবং বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ। শুধু তাই নয়, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকিসহ নানাভাবে হয়রানিরও অভিযোগ করেছেন তারা। এ নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পৌরসভার বাসিন্দা কামাল মিয়া বলেন, ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারব কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, নিজে অন্যায় করি না, কাউকে অন্যায় করতে দিইও না। আমি নির্বাচনকে প্রভাবিত করছি না।

খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, বাগেরহাট পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীনা হাসিবুল হাসান শিপন সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও তার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও সশস্ত্র হামলার অভিযোগ করেছেন। খান হাবিবুর রহমানের কর্মী-সমর্থকরা কয়েক দিন ধরে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে শিপনের ৫০ জন কর্মী-সমর্থককে আহত করারও অভিযোগ করে শিপন বলেছেন, প্রকাশ্যে সশস্ত্র হামলা ও হুমকির মুখে অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনসহ হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে লিখিতভাবে থানা ও নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের জানানো হলেও এখনো কোনো প্রতিকার হয়নি, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

নাটোর প্রতিনিধি জানান, নাটোর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী উমা চৌধুরী জলি ও বিএনপির শেখ এমদাদুল হক আল মামুন একে অন্যের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন এবং রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিতভাবে আচরণবিধি ভঙ্গের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। গতকাল দুপুরে শেখ এমদাদুল হক আল মামুন বলেন, প্রতিদিন নৌকা মার্কার কর্মী-সমর্থকরা ধানের শীষের নেতা-কর্মীদের প্রচারণায় দফায় দফায় বাধা দিচ্ছেন। জেলার শীর্ষ বিএনপি নেতাদেরও তারা লাঞ্ছিত করতে পিছপা হচ্ছেন না। ধানের শীষের টানানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছেন। অন্যদিকে উমা চৌধুরী জলি বলেন, বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী শেখ এমদাদুল হক আল মামুন মসজিদে মসজিদে সাম্প্রদায়িকতা ছড়াচ্ছেন। তাকে প্রচারণায় বাধা দেওয়া না হলেও তিনি বার বার মিথ্যা অভিযোগ করছেন। বিএনপির প্রার্থী তার দল ক্ষমতায় গেলে নৌকার কর্মীদের দেখে নেবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন বলেও তিনি দাবি করেন।

জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানান, জয়পুরহাট পৌরসভার হাউজিং এস্টেট এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় কাউন্সিলর প্রার্থী মতিয়র রহমান বাবুর কর্মী আবদুল মজিদকে মারধর করে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থী খায়রুল ইসলাম নয়ন। সোমবার রাতে এ ঘটনার সময় মজিদের চিত্কারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে নয়ন তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে সদর্পে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ : চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও হাটহাজারীর সার্কেল (এএসপি)-এর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন রাউজান পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নাগরিক কমিটি মনোনীত (স্বতন্ত্র) মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা। তিনি গতকাল বিকালে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, দুই পুলিশ কর্মকর্তা সরকার সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। তারা ওই প্রার্থীর নির্দেশনা অনুসারে প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের হয়রানি করছেন। প্রচারণায় থাকা লোকজনকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। দুই কর্মকর্তার নির্দেশে সাদা পোশাকে জেলা ডিবি পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল লতিফ, যুবলীগ নেতা আবু ছালেকসহ পাঁচ কর্মীকে বিনা কারণে আটক করে। তাদের ধরে নিয়ে সারা রাত নির্যাতন করে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এডিসি ও এসপিকে নোটিস, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট : বরগুনা প্রতিনিধি জানান, সোমবার রাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ না করার পাশাপাশি দায়িত্বে অবহেলার কারণে বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপারকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে কমিশন।

নড়াইল প্রতিনিধি জানান, কালিয়া পৌর নির্বাচনে দায়িত্বরত ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান হীরা। এ অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল ইসলামকে কালিয়া থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আচরণবিধি লঙ্ঘন অব্যাহত, শোকজ ও জরিমানা : জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুসারে মোরেলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এস এম মনিরুল হক তালুকদারকে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী উত্তম সাহা, অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী ও আবদুল বাকিকে নিয়মবহির্ভূত পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুন বানানোয় শোকজ করা হয়েছে। আখাউড়ায় দুই সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী মো. সাদেকুল ইসলাম সাচ্চু ও শিপন হায়দারকে শোকজ করা হয়। বিজয় সমাবেশ ও র্যালিতে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে বরগুনায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজকে। বরিশালের বাকেরগঞ্জে মাপের চেয়ে বড় ব্যানার বানানোয় কাউন্সিলর প্রার্থী ঝিলন ডাকুয়া ও আরিফুর রহমানকে ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

রঙিন পোস্টার সাঁটানোয় পিরোজপুর পৌরসভার কাউন্সিলর প্রার্থী এম ডি শেখ মেরাজকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভায় নাসিম পাশা নামের এক কাউন্সিলর প্রার্থীকে দেয়ালে পোস্টার লাগানোয় জরিমানা করা হয়েছে। মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করে অটোবাইকে নির্বাচনী স্টিকার লাগানোয় তোবারক খান ও রিপন ঘরামি নামের দুই ইজিবাইক চালককে ১০ দিন করে জেল দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর