বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
সাংবাদিক সজীব নিখোঁজ

তিন দিনেও জট খোলেনি রহস্যের

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন দিনেও সাংবাদিক আওরঙ্গজেব সজীব নিখোঁজ রহস্যের জট খুলছে না। মিলছে না অনেক প্রশ্নের উত্তর। তবে বাবার চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তার মেয়ে ইসমত আরা সাবা। অন্যদিকে, রহস্য উদঘাটনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধীরগতির তত্পরতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সজীবের স্বজন এবং গণমাধ্যমকর্মীরা। তবে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে র‌্যাব। অবশ্যই রহস্যের জট খুলবে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইন্ডিপেন্ডেন্টের স্টাফ রিপোর্টার রাস্নার বক্তব্য অনুযায়ী, ৯টার সময় শুরু হওয়া সংবাদের একটি নিউজে সজীবের উপস্থিতি ছিল। ওই প্রতিবেদনটি ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে। তবে সজীবের কললিস্টে দেখা গেছে, ৯টা ২২ মিনিটে সজীবের অবস্থান ছিল পোস্তগোলা এলাকায়। যমুনা টেলিভিশনের একজন প্রতিবেদকের কল ছিল তা। তবে গতকালও এ প্রতিবেদকের কাছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির রাস্না দাবি করেছেন, নিউজ লাইভ দেওয়ার পরও সজীবের সঙ্গে তিনি সামনা-সামনি কথা বলেছেন। এর বাইরে সজীবের ব্যবহূত মোটরসাইকেলে চাবি মিলেছে মোটরসাইকেলেরই বক্সের ভিতর। যা অতীতে কখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সজীবের সহকর্মীরা। সজীবের ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, হয়তো সজীবের সেলফোনটি আগে মিসিং হয়েছে, এটা হয়তো সজীব অনুমান করতে পারেনি। পূর্বপরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা চাইলে তা বের করতে পারবে। এদিকে, সজীব কোনো হতাশায় ভুগছিলেন কিনা? নাকি পরিবারে কোনো ধরনের সমস্যা ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে সজীবের স্ত্রী মোরশেদা বেগম নিশি-ও না সূচক জবাব দেন। কথা বলার একপর্যায়ে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন তিনি। বলতে থাকেন, ‘আমার স্বামীকে আপনারা ফিরিয়ে এনে দেন। আমি আর কিছু চাই না। হের কোনো শত্রু থাকতে পারে এইটা আমি বিশ্বাস করি না।’ নিশির পাশেই খাটে শুয়ে ছিল তার মেয়ে সাবা। সজীব নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই বাবার শোকে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে সে। ইতিমধ্যে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়েছে তাকে। এদিকে, সজীব প্রকৃতপক্ষেই গত রবিবার সকাল ৯টার দিকে লঞ্চ টার্মিনালে গিয়েছিলেন কিনা? বিষয়টি নিশ্চিত হতে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের জন্য গতকাল টার্মিনাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, কিছুদিন ধরেই সিসিটিভি ক্যামেরার ডিভিআর নষ্ট। তাই গত রবিবারের কোনো ফুটেজ ধারণ করা সম্ভব হয়নি। নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত সুপার হাতেম জানান, ঘটনার পর থেকেই তাকে খুঁজতে অনেক জায়গায় চেষ্টা চলানো হয়েছে। তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ কিংবা যাত্রীরাও ওই সাংবাদিক নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি। প্রসঙ্গত, গত রবিবার থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিনিধি আওরঙ্গজেব সজীব। সজীব বাংলাদেশ মেডিকেল রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমআরএ) সাবেক সভাপতি। সজীবের বাড়ি বিক্রমপুরের মুন্সীগঞ্জে। তিনি এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীসহ ঢাকার বকশীবাজার কমলদাহ রোডের ৯ নম্বর বাসার তৃতীয় তলায় বসবাস করতেন।

সর্বশেষ খবর