রবিবার, ৩ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিএনপি কার্যালয় দখলের চেষ্টা ‘আসল বিএনপি’র

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি কার্যালয় দখলের চেষ্টা ‘আসল বিএনপি’র

দলের রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দখল নিয়ে বিএনপি ও ‘আসল বিএনপি’ নেতা-কর্মীদের মধ্যে গতকাল বিকালে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে —বাংলাদেশ প্রতিদিন

রাজধানীর নয়াপল্টনে গতকাল বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখলের চেষ্টা করেন ‘আসল বিএনপি’র ব্যানারে শ’ দেড়েক লোকজন। এ সময় বিএনপি কর্মীদের ধাওয়া খেয়ে তারা সটকে পড়েন। ঘটনার সময় ‘আসল বিএনপি’র মুখপাত্র কামরুল হাসান নাসিম অদূরে পল্টন থানার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিকাল ৪টার দিকে ফকিরাপুল মোড় এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের নামে স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন নাসিমের অনুসারীরা। সেখানে উপস্থিত ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা তাদের ধাওয়া করেন। ধাওয়া খেয়ে তারা সরে পড়েন। এ সময় ‘আসল বিএনপি’র বেশ কয়েকজন কর্মীকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ করেন তারা। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় কার্যালয়ের আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চার-পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়েন। এ সময় ‘আসল বিএনপি’র চার সদস্য আহত হন। এ বিষয়ে কামরুল হাসান নাসিম পরে সাংবাদিকদের জানান, ‘গণতন্ত্রের জন্য দলীয় বিপ্লব করতে চেয়েছি। সেই বিপ্লবের অংশ হিসেবেই বিএনপি অফিসে যাওয়া-আসার মধ্যে থাকার জন্য আজ সেখানে গিয়েছিল আমার নেতা-কর্মীরা। কিন্তু তাদের মারধর করা হলো।’ নাসিম বলেন, ‘খালেদা জিয়া একজন মা। তিনি ভুল করতেই পারেন। আমি তো আর সেই ভুল করতে চাই না। তিনি অছাত্রদের দিয়ে ছাত্রদল গঠন করেছেন।’ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত বিএনপির নেতারা জানান, বিকাল ৪টার দিকে শ’খানেক বহিরাগত লোক হঠাত্ করে ‘জিয়া, জিয়া’ বলে মিছিল শুরু করে এবং আচমকা কার্যালয় লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে। এ সময় কার্যালয় থেকে বিএনপি  নেতা-কর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে নয়াপল্টন এলাকা থেকে পালিয়ে যায় বহিরাগতরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় কার্যালয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা অবস্থান করছিলেন।

বিএনপির সংবাদ সম্মেলন : ঘটনার পরপরই নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিকাল ৫টায় সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। এতে বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, মাসুদ তালুকদার, আবদুস সামাদ আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দলের মুখপাত্র রিজভী আহমেদ বলেন, সরকারের মদদপুষ্ট ঘটনা এটি। আগে-পিছে পুলিশ প্রহরায় শ’খানেক লোক বিএনপি কার্যালয় দখল করতে আসে। কিন্তু কার্যালয়ে উপস্থিত সাধারণ নেতা-কর্মীদের ধাওয়া খেয়ে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা আজিজুল হাকিম আরজুকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয় দলের পক্ষ থেকে। এতে ঘটনাটি কার মদদে কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে করেছে, বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার দাবি জানানো হয়েছে। ফজলুল হক মিলন বিষয়টিকে হাস্যকর উল্লেখ করে বলেন, এত বড় একটি রাজনৈতিক দল। কোটি কোটি কর্মী-সমর্থক রয়েছে যে দলের, সে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখলে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর কয়েকজন ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছিল, যা সমগ্র দেশবাসীর সামনে একটি হাস্যকর ঘটনা ছাড়া আর কিছু নয়।

সর্বশেষ খবর