বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

পাকিস্তানে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গি হামলা, নিহত ২১

প্রতিদিন ডেস্ক

পাকিস্তানে আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হত্যাযজ্ঞ চালাল সন্ত্রাসীরা। এবারের ঘটনাও পেশোয়ারে! প্রদেশটির বাচা খান ইউনিভার্সিটিতে ওই সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছেন। এতে হামলাকারীদের কমপক্ষে চারজনও নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন রসায়ন বিভাগের একজন অধ্যাপক। তার নাম ড. হামিদ। বিভিন্ন  সূত্র থেকে দাবি করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। দ্য ডন বলছে, নিহতের সংখ্যা ১৫ থেকে ৬০ হতে পারে। জানা গেছে, গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আসা শুরু করে শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা। যার নামে ওই বিশ্ববিদ্যালয়, গতকাল ছিল সেই বাচা খানের মৃত্যুবার্ষিকী। সেই উপলক্ষেই আয়োজন করা হয়েছিল এক স্মরণ অনুষ্ঠানের। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই কবিতা অনুষ্ঠান ‘মুশাইরা’ শুরু হওয়ার কথা। তখন সকাল ৯টা। কিন্তু অনুষ্ঠানের মাঝে হঠাৎই গুলির শব্দ। ছাত্র-শিক্ষকদের লক্ষ্য করে ছুটে আসতে থাকে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি। তার মাঝে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। তবে তাদের বেশির ভাগেরই ছুটি ছিল। ক্লাস না থাকায় সেই সময়ে হোস্টেলে ছিলেন অনেকেই। জঙ্গিরা মূলত সেখানেই হামলা চালায়। ওদিকে হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে তেহরিকে তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)।

পাকিস্তান পুলিশের ডিআইজি সাঈদ ওয়াজির বলেন, ‘জঙ্গি হানায় এখনো পর্যন্ত ২১ জন নিহত হয়েছেন। ক্যাম্পাসের ভিতর ছাত্রদের হোস্টেলেই মূলত হামলা চালানো হয়।  হোস্টেলে বেশির ভাগ ছাত্রই গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।’ চারসাড্ডা হাসপাতালের সুপার ১৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী এক ছাত্র জানিয়েছেন, হামলাকারীরা তাদেরই মতো হবে। তবে বয়স প্রায় এক হলেও তাদের পরনে ছিল সেনাবাহিনীর পোশাক। আর সবার হাতেই ছিল একে-৪৭। তার কথায়, ‘আমাদের ক্লাস ছিল না বলে হোস্টেলের ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎই গুলির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়।’

পাকিস্তান পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে পড়ে অন্তত ১০ জন জঙ্গি। খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পৌঁছায়। শুরু হয় গোলাগুলি। এর মধ্যে সেনাবাহিনী হোস্টেলের বেশির ভাগ ছাত্রকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রী শাহ ফারমান সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার হলে তখন ২০০ জন ছাত্র ছিলেন। তাদের প্রত্যেককে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। তার কথায়, ‘পুলিশ এবং সেনারা সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়ায় বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গেছে।’ এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সভাপতি বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টো। প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ হামলা কাপুরুষোচিত। যারা নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের ওপর হামলা চালায় তাদের কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধর্ম  নেই। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর এই পেশোয়ারেরই এক  সেনা স্কুলে জঙ্গিরা হামলা চালায়। ওই ঘটনায় ১৫০ জন নিহত হয়েছিলেন। যাদের বেশির ভাগই শিশু ছিল। এএফপি, বিবিসি, দ্য ডন।

সর্বশেষ খবর