শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই আসামি নিহত

নরসিংদী প্রতিনিধি

পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই আসামি নিহত

নরসিংদীতে জোড়া খুনের আট ঘণ্টার ব্যবধানে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জোড়া খুনের মামলার দুই আসামি নিহত হয়েছে। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে আরও একজন। নিহত ও আহতরা সদ্য ব্যবসায়ী খুনসহ একাধিক হত্যা ও ডাকাতি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। নিহতরা হলো শহরের নাগরিয়াকান্দী এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে জহিরুল ইসলাম (২৫) ও গাজীপুরের সাঈদ মোল্লার ছেলে রাকিব মিয়া (২৫)। আহত হোসেন আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড তাজা গুলি ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করে পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাত ৩টায় পৌর শহরের ইউএমসি জুট মিলের পার্শ্ববর্তী নাগরিয়াকান্দী বালুমাঠে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এরা নিহত হয়। এ ঘটনার মাত্র আট ঘণ্টা আগে একই দিন সন্ধ্যায় শহরের ভাগদী এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা আরিফ খন্দকার ও খোকন খন্দকার নামে দুই ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করে। এদিকে জোড়া খুনের ঘটনায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে সংশ্লিষ্ট থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলো— ইসলাম, জহিরুল, জাহিদুল, হোসেন আলী, রাকিব, ফয়সাল, হেলাল ওরফে ডাকাত হেলাল, আলামিন মোল্লা, মো. হানিফ, নাঈম, সালমান শাহ, রাজু, আলমগীর মোল্লা ও বিল্লাল ওরফে চোরা বিল্লাল। পুলিশ জানায়, দুই বছর আগে ভাগদী এলাকায় ১১ শতাংশ জমি কেনেন প্রবাসী রফিকুল ইসলাম। ওই সময় রফিক তার জমিতে টিনশেড ঘর তুলতে গেলে সন্ত্রাসী বিল্লাল ওরফে চোরা বিল্লাল তার কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। প্রবাসী রফিক নিরুপায় হয়ে সন্ত্রাসী বিল্লালকে ওই সময় ২০ হাজার টাকা চাঁদা দেন। সর্বশেষ গত সপ্তাহ থেকে রফিক তার জমিতে বাড়ি উত্তোলনের কাজ শুরু করেন। এ সময় বিল্লাল ও ফয়সাল পুনরায় প্রবাসীর কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা চায়। অস্বীকৃতি জানালে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সন্ধ্যায় ইসলাম, ফয়সাল ও চোরা বিল্লাল আবার প্রবাসী রফিকের কাছে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। তখন রফিক বিষয়টি তার নিকটাত্মীয় সেলিম খন্দকারকে জানান।  পরে সেলিম তার ভাই খোকন খন্দকার ও আরিফ খন্দকারকে ঘটনাস্থলে পাঠায়। ওই সময় খোকন ও আরিফের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী খোকন ও আরিফকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশের ছয়টি টিম রাত ৩টার দিকে শহরের ইউএমসি জুট মিলের পার্শ্ববর্তী বালুমাঠে অভিযান চালায়। সেখানেই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এদিকে একের পর এক ছিনতাই, ডাকাতি, খুনের ঘটনায় আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা নরসিংদী। গত এক মাসে বেশ কয়েকটি ডাকাতি আর চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনার পর চরম অবনতি হয়েছে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। সর্বশেষ চাঁদা না দেওয়ায় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীসহ দুই যুবককে গুলি করে হত্যা এবং পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই সন্ত্রাসী নিহতের পর শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কথা স্বীকার করেছেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, অপরাধীদের শনাক্ত করা হয়েছে। পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দ্রুত পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। ওসি বলেন, নিহতরা সবাই জোড়া খুন হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি। তাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর