বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু আজ

মেজবাহ্-উল-হক, ধর্মশালা থেকে

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু আজ

লাউড স্পিকারে বার বার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, সিটে বসুন, বেল্ট লাগান! বিমান কিছুক্ষণের মধ্যেই ধর্মশালায় অবতরণ করছে! ঘোষণার দিকে যেন কারও মনোযোগ নেই। সবাই জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। দৃশ্যগুলো কেউ মিস করতে চাচ্ছে না। বিমানের দুই পাশের জানালা দিয়ে দুই রকম দৃশ্য দেখা যাচ্ছিল। এক পাশে সবুজ গাছপালায় ভর্তি ছোট ছোট পাহাড়ের আড়ালে থাকা নান্দনিক ডিজাইনের বাড়িগুলোর সূর্যের আলো প্রতিফলিত হওয়ায় দেখে মনে হচ্ছিল যেন বালির ভিতর পড়ে থাকা মুক্ত দানা! আরেক পাশে বরফে ঢাকা উঁচু পাহাড়ের সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছে সাদা মেঘ। কখনো কখনো দেখা যাচ্ছে পাহাড়, বরফ ও মেঘের মিতালী। দৃশ্যটির সৌন্দর্য হাজারগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে রোদের তীব্রতা। ধর্মশালায় এখন চলছে বসন্ত কাল। তাই দিনে তীব্র রোদ আর রাতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। হিমালয়ের পাশে বলে রাতের হাওয়া এতো বেশি ঠাণ্ডা যেন শরীর এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয়! এমন ব্যতিক্রমী আবহাওয়ার সঙ্গেই মানিয়ে নিতে হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। দেশে তীব্র গরম থেকে হঠাৎ শীতের মধ্যে। আসলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এমনই- শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, গরম-ঠাণ্ডা সব কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। ধর্মশালায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। চেরাপুঞ্জির পরেই ভারতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় এই হিমাচল প্রদেশে। এখনো কয়েক দিন পর পরই বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টি হলেও ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। কেননা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৭৮০ ফুট (১ হাজার ৪৫৭ মিটার) উঁচুতে অবস্থিত স্টেডিয়াম। পাহাড়ের ঢালে হওয়ায় পানি জমার কোনো আশঙ্কা নেই।  মজার ব্যাপার হচ্ছে, ধর্মশালার স্টেডিয়ামটি বার বার পেসারদের জন্য সহায়ক করে তৈরি করা হলেও তা হয়ে যায় ব্যাটিং সহায়ক। এবারের টি-২০ বিশ্বকাপের আগে এখানে একটিই আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ হয়েছিল। গত বছরের অক্টোবরে ভারতের বিরুদ্ধে খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০ রানের পাহাড়সম টার্গেট তাড়া করেও জয় পেয়েছিল প্রোটিয়ারা। আর সব শেষ ওয়ানডে ম্যাচে ২০১৪ সালের অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৩৩০ রান করেছিল ভারত। ধর্মশালার উইকেট যে রানে ভরা তা বোঝাই যায়। টি-২০ বিশ্বকাপের উইকেট যে আইসিসি বোলারদের স্বর্গ বানাবে না সেটাও জানা কথা। এমন উইকেটেই আজ বিশ্বকাপের মিশনে নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সামপ্রতিক পারফরম্যান্সের কথা চিন্তা করলে টাইগারদের বিরুদ্ধে উড়ে যাওয়ার কথা ডাচদের। এশিয়া কাপে মাশরাফিদের ক্যারিশমা বিশ্ববাসী দেখেছেন। কিন্তু পরিসংখ্যান ঘাটতে গেলেই লড়াইয়ের মঞ্চ সামনে আসে। এখন পর্যন্ত দুই টি-২০তে দুই দলই জয় পেয়েছে একটি করে। ওয়ানডেতেও তাই। কিন্তু পরিসংখ্যানই তো সব নয়। তারপরেও অনিশ্চয়তার টি-২০তে ভবিষ্যদ্বাণী তো আর করা যায় না! তাছাড়া মুস্তাফিজুর রহমানের ইনজুরি বিপাকে ফেলে দিয়েছে মাশরাফিদেরকে। কাটার মাস্টার খেলবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। তবে এটা তো ঠিক যে, এশিয়া কাপে পাওয়া আত্মবিশ্বাস যদি আজকের ম্যাচে কাজে লাগানো যায় তাহলে বাংলাদেশকে আটকানো নেদারল্যান্ডসের পক্ষে অসম্ভবই বলা যায়।

সর্বশেষ খবর