রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

এইডস রোগীর প্রতি আচরণ পাল্টাতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

এইডস রোগীর প্রতি আচরণ পাল্টাতে হবে

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, এইডস কোনো অভিশাপ নয়; কিন্তু সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেক এইডস রোগী সমাজে অবহেলিত থাকে। আবার এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির বিধবা স্ত্রী, এতিম শিশু ও দম্পতিদের জীবন দুর্দশার মুখে পড়ে। এরা সমাজে একঘরে হয়ে যায়। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের এই যুগে এ ধরনের আচরণ খুবই দুঃখজনক। এ ক্ষেত্রে আমাদের চিন্তা প্রসারিত করতে হবে এবং আচরণ পাল্টাতে হবে। রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এইডস ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য এশিয়া প্যাসিফিক’ (আইসিএএপি) শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান। এইডস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল করতে আইসিএএপির দ্বাদশ আন্তর্জাতিক কংগ্রেস বাংলাদেশে আয়োজন করায় এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার তৈরিতে তাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি। এ সম্মেলন এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এইডস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেন, যতক্ষণ সমাজের সব সদস্য এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান অর্জন না করবে এবং আচরণ পরিবর্তন না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সমাজ নিরাপদ নয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, কম্বোডিয়ার জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ইয়াং মৌলি, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, আইক্যাপ-এর সেক্রেটারি জেনারেল জো থমাস, ইউনিসেফের প্রতিনিধি ফিলিপ কোরি, এইডস সোসাইটি অব এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকের প্রতিনিধি মিং হোয়ান চু। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং পার্টনারস ইন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি) যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৫৬টি দেশ থেকে প্রায় এক হাজার প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। এ সম্মেলনে তিনটি প্ল্যানারি সেশনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ৫০টি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে ৪০০ বক্তা গবেষণামূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন। সম্মেলন আগামীকাল শেষ হবে। ১৯৯০ সালে প্রথম অস্ট্রেলিয়ায় এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।  এইচআইভি সংক্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আরও বলেন, পরিসংখ্যানের দিক থেকে বাংলাদেশ এইডস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে নেই। তারপরও এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ এ দেশের বহুসংখ্যক তরুণ বিদেশে চাকরির জন্য যাচ্ছে। আমরা চাই না কোনো নাগরিক এই সংক্রমণের শিকার হোক। তিনি বলেন, যারা এইচআইভিতে আক্রান্ত কিন্তু এখনো শনাক্ত হননি, তাদের প্রতি আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে। কারণ এইচআইভি সংক্রমণের জন্য তারা হুমকির কারণ। এইডস নিয়ে সামাজিক বৈষম্য দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এইচআইভি বিস্তার রোধে সাফল্য অর্জন করলেও আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই।

সর্বশেষ খবর