মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা
নারায়ণগঞ্জে সাত খুন

ম্যাজিস্ট্রেটসহ দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের দুই মামলায় একজন ম্যাজিস্ট্রেটসহ দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে এ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আগামী ৩১ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে সাত খুনের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ২৩ জনের উপস্থিতিতে দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এদিন প্রথমে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এদিন প্রথমে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাত খুনের পর তার আদালতে গ্রেফতারদের মধ্যে চারজন ও একজন সাক্ষীর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়। দুপুরে সাত খুনের ঘটনায় নিহত মনিরুজ্জামানের ছোট ভাই মিজানুর রহমানের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আরও তিনজন উপস্থিত থাকলেও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের সময় প্রার্থনার কারণে এদিন অপর তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। তিনি আরও জানান, সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা রয়েছে তাই কালক্ষেপণ না করে দুটি মামলার সাক্ষীদের আলাদাভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ না করে একসঙ্গে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ আদালতের কাছে আবেদন করলে আদালতে তা মঞ্জুর করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে ৩টায় দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। আর আসামি পক্ষের অনেক আইনজীবী থাকায় সাক্ষীদের আলাদা আলাদা জেরা করায় সময় বেশি ব্যয় হচ্ছে। নিহতের পরিবারের সদস্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নূর হোসেনের সঙ্গে নজরুলের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধে নূর হোসেনের পরিকল্পনায় নজরুলসহ সাতজনকে খুন করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, আসামি পক্ষের আইনজীবীরা নানা কৌশলে সাক্ষ্য পেছানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বারবার সময় প্রার্থনা করে মামলাটিতে দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি করতে চাইছেন। এদিকে আসামি নূর হোসেনের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোকন সাহা অভিযোগ করেন, নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদ চেয়ারম্যান ও তার ছেলে সাইদুল ইসলাম আদালতের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী একজনের সাক্ষ্য চলাকালীন অন্য কোনো সাক্ষী থাকতে পারবেন না। কিন্তু তারা দুজন আদালতের নিয়ম ভেঙে একজনের সাক্ষ্য চলাকালে আদালতের ভিতরে অবস্থান করছিলেন। বিষয়টি পরবর্তীতে আদালতের কাছে ধরা পড়ে। জানা গেছে, সাত খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ২৩ জন। পলাতক আছেন ১২ জন। সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী বিজয় কুমার পাল হলেন নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মেয়ের জামাতা ও অপর বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি হলেন নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী। মামলা দুটির অভিন্ন সাক্ষী হলো ১২৭ জন করে। এ কারণে উভয় মামলার সাক্ষীদের একই সঙ্গে দুই মামলায় জেরা করা হয়।

 প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড থেকে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকার ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা করে তাদের লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেওয়া হয়। ৩০ এপ্রিল ছয়জন এবং পরের দিন একজনের মৃতদেহ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে র‌্যাব-১১ এর সাবেক সিও তারেক মোহাম্মদ সাঈদসহ তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

সর্বশেষ খবর