মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা
রডের বদলে বাঁশ

ঠিকাদারের সব কাজ তদন্তে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক ও গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার মেঘডুমুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণ কাজে লোহার রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়ার পর ওই ঠিকাদারের নির্মাণাধীন আরও ৭টি বিদ্যালয়ের শৌচাগারের কাজ তদন্তে গতকাল আরও একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্তে কমিটিতে গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী তারাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। অন্য দুই সদস্য হলেন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী শাহজাহান আলী ও সাদুল্যাপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইনছার আলী। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট  প্রদান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলো হল, গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুপতলা ইসলামিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিনদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেংগরজানি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাধাকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, বোয়ালি ও গোবিন্দপুর (পলাশ)  প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিনি আরও জানান, এরআগে গত রবিবার এই ঘটনায় গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ওই ঠিকাদার  মেঘডুমুরসহ মোট আটটি বিদ্যালয়ের কাজ পেয়েছেন। কিন্তু লোহার রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের অভিযোগ উঠার পর তার আটটি বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মেঘডুমুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে  শৌচাগার (ওয়াস ব্লক) নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গত ৮ এপ্রিল স্থানীয়রা শৌচাগারের ঢালাই কাজে লোহার রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের ঘটনা ধরে ফেলেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায় নেবে না পরামর্শক : বাংলাদেশ ফাইটোস্যানিটারি শক্তিশালীকরণ প্রকল্পে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা স্থলবন্দরে নির্মাণাধীন ভবনে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহারের ঘটনায় যুবলীগ নেতা মণি সিংহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয় ইন্টারন্যাশনালের দায় নেবে না এর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ‘আমাদের হেয় প্রতিপন্ন করতেই কোনো মহল এ ঘটনা ঘটাতে পারে। যদিও আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান না। আমরা সরাসরি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়ীও করছি না। আবার আমরা ঠিকাদারের কোনো দায়ও নিচ্ছি না।’ গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লিমিটেড আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সাত্তার। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী দেওয়ান নুরুজ্জামান। ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সাত্তার অভিযোগ করে বলেন, ১৭০টি লুবারের মধ্যে তিনটিতে বাঁশ দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো ঠিক আছে। যেটুকু অংশ বাঁশ দেওয়া হয়েছে, তাতে রডের প্রয়োজন হতো পাঁচ কেজি। পাঁচ কেজি রডের জন্য কেউ বাঁশ দেয় না। পুরো ভবনে এমন ত্রুটি পাওয়া গেলে ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লিমিটেড সব দায় নেবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সাত্তার। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম আসায় বিষয়টি পরিষ্কার করতে চাই। কারণ আমরা ৩০ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে কাজ করছি।’ তার দাবি, রডের বদলে বাঁশ ব্যবহারের ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলক ও সাজানো। ঘটনাটি ন্যূনতম সত্য নয়। যে অংশে বাঁশ দেখানো হয়েছে, তা ভবনটির নকশার অংশ নয়।

সর্বশেষ খবর