শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৩

প্রতিদিন ডেস্ক

পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে গতকাল ভোররাতে তিন জেলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপায় জামায়াত নেতা ইদ্রিস আলী পান্না (৫০), খুলনার কয়রায় ‘বনদস্যু’ আনারুল সানা (৪৫) ও ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে কথিত ডাকাত শহিদুল ইসলাম ওরফে পচা।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, শৈলকুপা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ থাকা জামায়াত নেতা ইদ্রিস আলী পান্নার (৫০) লাশ মিলেছে। গতকাল হরিণাকুণ্ডু উপজেলার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে এ লাশ পাওয়া যায়। নিহতের পরিবার দাবি করছে, পান্নাকে ক্রসফায়ারে মারা হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ দাবি করছে, সড়ক দুর্ঘটনায় সে মারা গেছে। পান্না ছিলেন হরিণাকুণ্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি ও রঘুনাথপুর গ্রামের গোলাম কওছার আলী মণ্ডলের ছেলে। হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি মাহাতাব উদ্দীন জানান, গতকাল ভোরে হরিণাকুণ্ডু পৌরসভা এলাকার জোড়াপুকুরিয়া মাঠে জামায়াত নেতা ইদ্রিস আলীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। নিহত ইদ্রিস আলী পান্নার বিরুদ্ধে নাশকতাসহ ৮-৯টি মামলা রয়েছে। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার ছিলেন। এ ছাড়া শৈলকুপা উপজেলার মহিষাগাড়ি জামে মসজিদের ঈমামতিও করতেন। ৪ আগস্ট থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। উল্লেখ্য, নিখোঁজ হওয়ার পর ৯ আগস্ট ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার স্ত্রী মোছা বেগম ইদ্রিস জানিয়েছিলেন, তার স্বামীকে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে গেছে। তিনি তার স্বামীকে ক্রসফায়ারে হত্যার আশঙ্কা করেছিলেন। অপর ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনাটি ঘটেছে হরিণাকুণ্ডুতে। এখানে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে শহিদুল ইসলাম ওরফে পচা নামে একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোররাতে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ফলশী বটতলা নামক স্থানে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে র‌্যাব অস্ত্র, গুলি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে। নিহত শহিদুল ইসলাম ওরফে পচা হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পার-দখলপুর গ্রামের তোরাব আলীর ছেলে। র‌্যাব জানায়, তার বিরুদ্ধে হরিণাকুণ্ডু ও ঝিনাইদহ থানায় হত্যা, অপহরণ, বোমাবাজি, চাঁদাবাজি ও  অপহরণসহ ১১টি মামলা রয়েছে। ঝিনাইদহ র‌্যাবের অধিনায়ক মেজর মনির আহমেদ জানান, র‌্যাবের একটি নিয়মিত টহল দল রাতে টহল দিচ্ছিল। তারা হরিণাকুণ্ডুর ফলশী বটতলা নামক স্থানে পৌঁছলে একদল ডাকাত র‌্যাবের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। ১০-১৫ মিনিট ধরে উভয়ের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল পিছু হটে যায়। ঘটনাস্থল থেকে একজনের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ, ১টি সাটারগান, ২ রাউন্ড গুলি, ১টি হাঁসুয়া উদ্ধার করা হয়।

খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, কয়রা থানা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সুন্দরবনে বনদস্যু জোনাব বাহিনীর সদস্য আনারুল সানা (৪৫) নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোর রাতে সুন্দরবনের কয়রা উপজেলা অংশের খড়খড়িয়া নদীর দক্ষিণ পারে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থকে ১টি বন্দুক, ৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও দুটি রাম দা উদ্ধার করেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কয়রা উপজেলার মহারাজপুর এলাকা থেকে আনারুলকে আটক করেছিল পুলিশ। কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শমসের আলী জানান, আনারুল দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনে দস্যুবাহিনী পরিচালনা করে আসছিল। আটক হওয়ার পর তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে বেরুলে তার সঙ্গীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা আনারুলকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর গুলি করে। পুলিশও পাল্টা গুলি করলে আনারুল নিহত হয়। তার বিরুদ্ধে খুন ও ডাকাতির ৬টি মামলা রয়েছে। সে বনদস্যু জোনাব বাহিনীর সদস্য।

সর্বশেষ খবর