গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ আখ খামার থেকে সাঁওতালরা উচ্ছেদ হওয়ার পর নিজ গ্রামে ফিরে গেলেও এখনো তাদের আতঙ্ক কাটছে না। যদিও গতকাল আর নতুন কোনো হামলা বা গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেনি কিন্তু ইতিপূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনায় স্বাভাবিক হতে পারছেন না তারা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত বা হাটবাজার করার মতো মানসিক অবস্থাও তার এখন নেই। অন্যদিকে খাদ্য সহায়তাও সেভাবে মিলছে না। তারা নিজেরাই ত্রাণ কমিটি গঠন করে সহায়তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ইক্ষু খামার জমি উদ্ধার সংহতি কমিটির সহ-সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, যদিও নতুন কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি তবুও আগের ঘটে যাওয়া ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো আতঙ্কে আছেন। এ ক্ষত শুকাতে সময় লাগবে বলে তিনি মনে করেন। এখন সাঁওতালদের ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব রয়েছে। হাঁড়ি পাতিল বিছানা কাপড় লুট এবং পুড়ে যাবার পর এগুলো নতুন করে কেনার সামর্থ্য তাদের নেই। অসহায়দের সহায়তা দিতে সাঁওতালরা নিজেরাই ত্রাণ কমিটি গঠন করেছেন।
বিচার বিভাগীয় তদন্ত চায় বিএনপি : নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে গাইবান্ধায় সাঁওতালদের ওপর হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এই দাবি জানান। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গাইবান্ধা জেলায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ওপর বর্বর হামলা এবং পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলি ও পিটুনিতে ৪ জন সাঁওতালের মৃত্যু বাংলাদেশের মতো স্বাধীন রাষ্ট্রে ঘটতে পারে, তা ভাবলেই আঁতকে উঠতে হয়। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশেই গাইবান্ধায় লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে বলে দেশবাসী বিশ্বাস করে।
এ ধরনের বর্বরোচিত ঘটনা পাকিস্তান আমলের গণহত্যাকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।’ বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর এ ধরনের আক্রমণ সব সময় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে বিভিন্ন ধর্মসম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করা কেবল আওয়ামী লীগের পক্ষেই সম্ভব। বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর আশ্রিত লোকজনদের দ্বারা হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর হামলা, তাদের উপাসনালয়ে আক্রমণ ও বাড়ি-ঘরে হামলা ভাঙচুর অবিরামভাবে ঘটে চলেছে। বর্তমানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন, সহায় সম্পত্তি ও মানসম্মান চরম হুমকির মুখে।