শিরোনাম
শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অন্তঃসারশূন্য ফর্মুলা খালেদার : কাদের

♦ কমিশন রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার
♦ সংবিধান মেনে সার্চ কমিটি
♦ অনেক কিছুই আইনে আছে
♦ সংলাপের আহ্বান হাস্যকর

নিজস্ব প্রতিবেদক

অন্তঃসারশূন্য ফর্মুলা খালেদার : কাদের

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে দেওয়া প্রস্তাবকে চর্বিতচর্বণ ও অন্তঃসারশূন্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ফর্মুলা অন্তঃসারশূন্য। তিনি জাতির সঙ্গে তামাশা করেছেন। তার সংলাপের আহ্বান  হাস্যকর। ৪৫ মিনিটের অন্তঃসারশূন্য বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে জনগণের ওপর তার (খালেদা জিয়া) কোনো আস্থা নেই। এটি নির্লজ্জ মিথ্যাচার। এই ভুল রাজনীতির জন্য তিনি ও তার দল এখন গণবিচ্ছিন্ন। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার দেওয়া প্রস্তাব নিয়ে তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) এমন কিছু প্রসঙ্গ এনেছেন, যা ইতিমধ্যেই আমাদের সংবিধান বা নির্বাচনী আইনে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন সম্পূর্ণ রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। এক্ষেত্রে সংবিধান মেনেই সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিএনপি ও খালেদা জিয়া বিতর্ক সৃষ্টি করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির প্রস্তাবনায় গ্রহণযোগ্য ও ভালো কিছু থাকলে তা গ্রহণ করা যেতে পারে, তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি কাকে ডাকবেন বা ডাকবেন না, সেটা একান্তই তার বিষয়। তিনি বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের যে প্রক্রিয়া দেখিয়ে গেছেন, সেখান থেকে আওয়ামী লীগ বিচ্যুত হবে না, হওয়ার কোনো সুযোগও নেই। অতীতে এত গণতান্ত্রিক ও আধুনিক প্রক্রিয়া কখনো কোনো সরকার অনুসরণ করেনি। তাই খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন তার মাধ্যমে তিনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে অবজ্ঞা করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। দেখতে হবে আমরা সংবিধান অনুসরণ করছি কি-না। সংবিধানে যা আছে আমরা সে অনুযায়ী চলতে চাই। এর আগে রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। সেই প্রক্রিয়া থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, বিএনপি ও তাদের নেত্রী ভুল রাজনীতির কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এখন মিথ্যাচার করছেন। জনগণের কথা না ভেবে তারা এখন কোন দেশে কে ক্ষমতায় এলো তা খুঁজে বেড়াচ্ছে। জনগণের ভোটের ওপর বিএনপির কোনো আস্থা বা বিশ্বাস নেই। গত নির্বাচন তারা প্রতিহত করতে চেয়েছিল। এ জন্য পেট্রলবোমার আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তিনি বলেন, কোনো প্রেসক্রিপশন দেওয়ার আগে খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা, মানুষ হত্যার অপরাধে, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার অপরাধে, তার ছেলে তারেক জিয়ার মানি লন্ডারিংয়ের জন্য, দুর্নীতির জন্য, নিজের জন্মতারিখ নিয়ে জাতির সামনে মিথ্যাচারের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপ্রধান রূপে রাষ্ট্রের অন্য সব ব্যক্তির ঊর্ধ্বে। সংবিধানের চতুর্থ ভাগের ৪৮ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ওপর প্রদত্ত ও অর্পিত সব ক্ষমতা প্রয়োগ ও কর্তব্য পালনের অধিকার দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের সপ্তম ভাগের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ প্রদান করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশন এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে রাষ্ট্রপতি সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করেন।’ এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতিকে যে সংলাপ অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন, তা খুবই হাস্যকর। কারণ তিনি (খালেদা জিয়া) ইতিপূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপ আহ্বানকে অসম্মান দেখিয়েছিলেন। তার পুত্র বিয়োগের পর প্রধানমন্ত্রী তাকে সমবেদনা জানাতে গুলশান কার্যালয়ে গেলে খালেদা জিয়া কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে সংলাপের সম্ভাবনাকে চিরদিনের জন্য রুদ্ধ করে দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সংস্কারের ফর্মুলায় বাংলাদেশের জনগণের ওপর কিংবা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ-র‌্যাব, বিজিবির প্রতি খালেদা জিয়ার আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের নবজাতককে হত্যা করেছিলেন। মাগুরার উপনির্বাচন ও ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, নিজের অতীত ভুলে গিয়ে এখন তিনি (খালেদা জিয়া) ভালো ভালো বুলি আওড়াচ্ছেন।

সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতি তাদের কোনো অঙ্গীকার নেই। যে কোনোভাবে ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন. মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দেলোয়ার হোসেন, আমিনুল ইসলাম আমিন, বিপ্লব বড়ুয়া, আনোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু, গোলাম রব্বানী চিনু, মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আরেং প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর