শুক্রবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

নাসিরনগরের মূল হোতা গ্রেফতার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

নাসিরনগরের মূল হোতা গ্রেফতার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর ঘটনার মাস্টারমাইন্ড আলোচিত আওয়ামী লীগ-দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নাসিরনগর সন্ত্রাসের দীর্ঘ ৬৫ দিনের মাথায় তাকে গ্রেফতার করা হলো। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও স্থানীয় পুলিশের একটি দল গতকাল বিকালে তাকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মফিজ উদ্দিন এবং ভাটারা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনের হামলার ঘটনায় ট্রাক ভাড়া ও লোক জমায়েতে ওই ইউপি চেয়ারম্যান জড়িত ছিলেন বলে ইতিমধ্যে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ডিবির ওসি মো. মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আঁখি একটি গাড়িতে চলাচল করছে এমন খবরের ভিত্তিতে আমাদের একটি দল ঢাকায় যায়। দুই দিন ধরে আঁখিকে ধরার জন্য আমাদের অভিযান চলছিল। গাড়ির নম্বর ট্র্যাক করে ভাটারা থানা পুলিশের সহায়তায় বিকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকায় রেখেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ তবে গ্রেফতার দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিকে কোথায় রাখা হয়েছে সে বিষয়টি জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরে হিন্দু-বাড়িঘরে হামলা ও মন্দিরে ভাঙচুর কাজে তিনি সহায়তা করেন। তার নির্দেশ ও সহায়তায় ওই দিন তাণ্ডব ঘটে। ট্রাকের পর ট্রাক মানুষ সরবরাহ করে সেখানকার পরিস্থিতি টালমাটাল করেন তিনি। স্থানীয় মন্ত্রীকে কুপোকাত করতেই হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সূত্র জানায়, বিশেষ ব্যক্তিদের অনুকম্পায় আঁখি এত দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান করছিলেন। এরপর পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে তিনি গা-ঢাকা দেন। অবস্থান জানতে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আঁখির প্রধান ব্যক্তিগত সহকারী উত্তম কুমার দাস ও হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মনোরঞ্জন দেবনাথকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল করিম জানান, নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বছর ২৯ অক্টোবর নাসিরনগরে ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরিফের ওপর শিবমূর্তি বসিয়ে ছবি পোস্ট দেন হরিপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাস (৩০)। এ ঘটনায় তার ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা নাসিরনগর উপজেলা। তখন একদল লোক হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর-মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এসব ঘটনায় থানায় ৮টি পৃথক মামলা হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর