আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক্স ই-ভোটিং বা ইভিএম ব্যবহারকে ‘খুবই গৌণ বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়কে আড়াল করতেই ই-ভোটিংকে সামনে আনা হয়েছে। মূলত নির্বাচনে টাকার খেলা, ক্ষমতার দাপট, প্রশাসনিক কারসাজি, সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধ এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থাপনার মূল সমস্যার গোড়ায় গিয়ে সমাধান না করা হলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না। এখন যে নির্বাচন পদ্ধতি রয়েছে, তার আমূল পরিবর্তন করে সংখ্যানুপাতে করা উচিত। নির্বাচনী ব্যবস্থা সংখ্যানুপাতিক করা হলে জনগণ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ইশতেহারের ও ওই সব দল কর্তৃক উত্থাপিত বিষয়গুলো যাদেরটা পছন্দ হবে, ভোটের সময় তাদেরটার প্রতি সমর্থন দিতে পারবে। নির্বাচনে যারা যত শতাংশ ভোট পাবে তারা তত শতাংশ আসন পাবে। এটা করা হলে নির্বাচনে কালো টাকার খেলা কমে যাবে। এমন নির্বাচনে ব্যক্তিগত রেষারেষির বদলে নীতি আদর্শের প্রতিযোগিতা হবে। রাজনীতির মান আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, এসব মৌলিক ভাবনা বাদ দিয়ে ই-ভোটিং কোনো ফলাফল আসবে না। প্রবীণ এ রাজনীতিক বলেন, আজকের প্রেক্ষাপটে আরও যে জিনিসটা জোর দিয়ে বলা দরকার, এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ নির্বাচনে জামানতের পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকছেন। নির্বাচনকে বিত্তবানদের মধ্যে লড়াইয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে জনগণ ও ভোটার কর্তৃক বিত্তবানদের খুঁজে নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন জানিয়ে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে। তারা যেন সব রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কেবল আওয়ামী লীগ-বিএনপির সমান সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া নয়। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হচ্ছে প্রতিটি নাগরিককে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া এবং ভোট দেওয়ার সমান সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া। তিনি বলেন, নির্বাচন এখন কোটিপতিদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিণত করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এসব মৌলিক বিষয়গুলোতে আগে দৃষ্টি দেওয়া দরকার।