শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাস-ট্রেন-লঞ্চে ঢাকামুখী জনস্রোত

দুর্ভোগ, ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করে ঢাকায় ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। রাজধানীতে ঈদের আমেজ কাটতে শুরু করেছে। ফিরে আসছে ঢাকার চিরচেনা পরিবেশ। নগরীর রাস্তা, অলিগলি এখন আর ফাঁকা নেই। কর্মব্যস্ত মানুষের ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে যানবাহনের ছুটোছুটি। ঈদের ছুটি শেষে বুধবার থেকেই কর্মজীবী মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেন। তবে গতকাল দিনভর ছিল রাজধানীমুখী মানুষের ফিরতি স্রোত। শেষ রাত থেকেই ঢাকার বাস টার্মিনাল, ট্রেনস্টেশন ও সদরঘাটে মানুষের ভিড়ভাড়াক্কা দেখা গেছে। ঠাসাঠাসি যাত্রী বোঝাই করে আসা দূরপাল্লার বাসগুলো মুহূর্তে মুহূর্তে এসে থামতেই কোলাহলমুখর হয়ে ওঠে আন্তজেলা টার্মিনালগুলো। তবে ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা অনেকেই অভিযোগ করে জানান, বাসের টিকিট পেতে বিড়ম্বনা আর বাড়তি ভাড়া গুনে তবেই ‘স্বস্তিতে’ তারা ঢাকায় ফিরছেন।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ২৩ জেলা থেকে ঢাকামুখী হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে শিমুলিয়া ঘাটে। সকাল থেকেই শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ও শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি নৌপথের লঞ্চ, ট্রলার ও স্পিডবোটসহ প্রতিটি নৌযানে ছিল যাত্রীদের আগে ওঠার প্রতিযোগিতা। এ সময় পদ্মা পাড়ি দিতে বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ঢাকাগামী বিপুলসংখ্যক যাত্রী। ফলে শিমুলিয়া ও কাওড়াকান্দি ঘাটে সৃষ্ট জনজটে চরম দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রীরা।

শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি রুটের ফেরি-লঞ্চে ছিল উপচে পড়া ভিড়। চরম ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। মাওয়া ঘাট টার্মিনালে যাত্রীর ভিড়ের তুলনায় পরিবহন সংকটের সুযোগে মাথাপিছু ৪০-৫০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাওয়া থেকে গুলিস্তান ও মাওয়া থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত সিটিং সার্ভিস বাস-মিনিবাসে ৭০ টাকার স্থলে ১০০ টাকা এবং লোকাল বাসের ছাদে ৫০ টাকা আদায় করা হয়।

এবার ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষজন অনেকটা দুর্ভোগ ভোগান্তি ছাড়াই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে সক্ষম হন। ঢাকায় কর্মস্থলে ফেরার ক্ষেত্রেও মাওয়া রুট ছাড়া অন্য সব রুটের যাত্রীরা মোটামুটি স্বাচ্ছন্দ্যেই ফিরতে পারছেন বলে জানা গেছে। ট্রেনযাত্রাতেও বড় ধরনের শিডিউল বিপর্যয় না ঘটায় যথাসময়ে যাতায়াত করতে পেরে যাত্রীরা বেশ খুশি। কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী জানান, গতকাল বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকায় আসা প্রতিটি ট্রেন ছিল যাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা। এ অবস্থা শনিবার পর্যন্ত থাকতে পারে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের সদরঘাট টার্মিনালের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আজ (গতকাল) ভোর থেকে ঈদফিরতি লঞ্চযাত্রীরা ঘাটে নামতে শুরু করেন। যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় নেই। তবে আগামীকাল থেকে ভিড় বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে। কারণ হিসেবে বলা যায়, ঈদের ছুটির বড় একটা অংশ এখনো ছুটিতে রয়েছেন। বিশেষ করে যারা বুধ ও বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়েছেন, তারাই শুক্র ও শনিবার ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।’ এদিকে লঞ্চে তেমন ভোগান্তি নেই বলেই মন্তব্য করেছেন যাত্রীরা। অনেকে উৎসব-আমেজে এসেছেন এমন স্বস্তিও প্রকাশ করেন। সুরভী-৭ লঞ্চের যাত্রী শফিক বলেন, ‘শুক্রবারের কেবিন পাওয়া যাচ্ছে না তাই এক দিন আগেই চলে এলাম। খুব ভালোভাবেই আসতে পেরেছি। লঞ্চে চাপাচাপি তেমন ছিল না আজকের যাত্রায়।’

 

সর্বশেষ খবর