শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

মন্ত্রী-এমপিরাই উল্টা পথে চলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

মন্ত্রী-এমপিরাই উল্টা পথে চলেন

রাস্তায় মন্ত্রী-এমপিরাই উল্টো পথে চলেন উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মন-মানসিকতা পরিবর্তন না হলে যানজট দূর হবে না। আমাদের ধৈর্য কম। উল্টো দিকে গাড়ি চালিয়ে দিয়ে যানজটের সৃষ্টি করি। গতকাল ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের বাজেট অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের মঞ্জুরি দাবির ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ভিআইপিদের এ ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা মন্ত্রী-এমপি, গাড়ির চাপ দেখলেই ধৈর্য আর মানে না। আমরা তখন উল্টো পথে যাই। আমরা যদি সাধারণ মানুষকে আইন মানতে পরামর্শ দেই তাহলে আমাদের নিজেদের আইন মানা উচিত।’ ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘এই ঈদে রাস্তায় যানজট ছিল না, যানজট ছিল শুধু বিএনপির প্রেস ব্রিফিংয়ে।’ এ সময় তিনি পাহাড়ধসে দুর্গত অঞ্চল রাঙামাটি থেকে ফেরার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘এই ঈদে রাঙামাটি ছুটে গেছি। সেখান থেকে ঢাকায় ফিরলাম, কোনো যানজট পাইনি। রাস্তা ফাঁকা, কাঁচপুরে ৪০ মিনিট জ্যামে আটকা থাকলাম। কাঁচপুর ব্রিজ থেকে এই দিকে (ঢাকার দিকে) আট লেনের রাস্তা! যানজট দেখলাম। কারণ গাড়িগুলো এলোপাতারি রাখা, কে আগে যাবে প্রতিযোগিতা। কারও সহ্য হয় না। যাত্রীরাও চালককে চাপ দেয়, ট্রিপ বেশি দেওয়ার জন্য চালকরাও। আসলে আমাদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন হতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে এত কমিটেড ও ডায়নামিক প্রধানমন্ত্রী খুব কমই আছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে পদ্মা সেতু নিয়ে কথা কম বলতে বলেছেন। আমি বলি না। তবে ঢাকায় থাকলে প্রতি শুক্রবার পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিদর্শনে যাই। সামগ্রিকভাবে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ ৪৩ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।’

এর আগে ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘রাস্তা করার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদে মানুষের চলাচল নিশ্চিত করতে হবে; যানজট নিরসনে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।’ তিনি মহাসড়কে যান চলাচলে সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮০ কিলোমিটারে বেঁধে দেওয়ার সুপারিশ করেন। বলেন, ‘অতিরিক্ত মুনাফার লোভে বেপরোয়া যান চালায় মালিক ও চালকরা। লক্ষ্য করছি মালিক সমিতির সভাপতিও কোনো কোনো মন্ত্রী।’ এ সময় তিনি প্রশ্ন করেন, ‘মালিক-শ্রমিক সমিতির সভাপতিও মন্ত্রী, কীভাবে হবে?’ স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘কিলোমিটারে ২৫ লাখ থেকে এক কোটি টাকা খরচ হয়। সড়ক নির্মাণের পরে বিধ্বস্ত হয়ে যায় তাড়াতাড়ি। এ দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ারদের যদি নির্দেশ দেন ভালো হয়।’ জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, ‘যখন পদ্মা সেতুর খরচ ৮ থেকে ২৮ হাজার হয়— তখন মনে প্রশ্ন ওঠে।’

সমালোচনার জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সমালোচকরা আমার বড় বন্ধু, যদি গঠনমূলক হয়। চাটুকার মোসায়েবরা আমার বড় শত্রু। তারা বলে সব ঠিক আছে। আসলে আই অ্যাম নট অলওয়েজ রাইট, ভুল হবেই; ভুল সংশোধন করতে আমরা পারি।’ ২০০৮ সালে সড়কে এক হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন বাজেট বেড়ে এখন ১৭ হাজার কোটি টাকা হওয়ার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু কিছু অনিয়ম আছে, অস্বীকার করার উপায় নেই।’ বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাজেটের পর বিএনপি প্রেস ব্রিফিং করে। বাজেট নিয়ে কত কথাই হলো। এখন কিছু কিছু জিনিস রিভাইজ করে প্রধানমন্ত্রী সংশোধন করে দিয়েছেন। এখন বাজেট নিয়ে আনন্দ।’

সর্বশেষ খবর