মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
হত্যা না আত্মহত্যা

শিশু রাফিদের মৃত্যু নিয়ে এখনো রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কলাবাগানে রেদওয়ান আহমদ রাফিদের (১১) মৃত্যুরহস্যের কোনো কূলকিনারা হয়নি। শনিবার বিকালে কলাবাগান ৪/৪ লেক সার্কাসের বাসা থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পুলিশ রাফিদের লাশ উদ্ধার করলেও সে আত্মহত্যা করেছে তা পরিবারের সদস্যদের মতো মানতে নারাজ খোদ তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। তবে ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড হলে রাফিদের খুনি কে—গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিষয়টির সুরাহা হয়নি। অন্যদিকে ময়নাতদন্তের পর গতকাল রাফিদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দায় তার লাশ দাফন করা হয়েছে। কলাবাগান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সমীর চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘শিশু রাফিদের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। সবগুলো দিক গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আমরা হাতে  পাইনি। তাই কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আপাতত অপমৃত্যুর মামলা নেওয়া হলেও হত্যার ব্যাপারে কোনো প্রমাণ পেলে তা হত্যা মামলায় পরিণত হবে।’ তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, রাফিদ কাঁঠালবাগানে একটি মাদ্রাসায় হাফেজি পড়ত। গত ঈদে জামাকাপড় কেনাকাটা নিয়ে বাবার সঙ্গে সে অভিমান করে ছিল। ৪/৪ লেক সার্কাস রোডের বাসায় নিচতলায় ১০ বছর ধরে বসবাস করছে রাফিদের পরিবার। ২০১২ সাল থেকে তাদের সঙ্গে সাবলেটে বাস করে আসছিল কারিম উল্লাহ খানের পরিবার। মেট্রো শপিং মলের একটি কসমেটিকসের দোকানে চাকরি করেন কারিম। রাফিদের মামা মামুন বলেন, ‘আপার পরিবারের সঙ্গে চার বছর ধরে সাবলেটে বসবাস করছে কারিম উল্লাহ খানের পরিবার। তার স্ত্রী নাজমা আক্তারের সঙ্গে আপার পরিবারের মনোমালিন্য চলছিল। বাসা ছেড়ে দেওয়ার কথা তাদের বললেও তারা শুনছিলেন না। উল্টো নাজমা বলছিলেন, যদি বাসা ছাড়তে হয় তাহলে মার্ডার করেই ছাড়ব।’ মামুন বলেন, রাফিদের গলায় ওড়না দিয়ে জানালার গ্রিলের সঙ্গে বাঁধা থাকলেও তার পা দুটি ছিল খাটের ওপর। তার প্রশ্ন, এভাবে কি কোনো শিশু আত্মহত্যা করতে পারে! এ অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় সাবলেট বাসিন্দা নাজমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘রাফিদকে আমি আমার সন্তানের মতোই দেখি। ওকে আমি মারতে যাব কেন। ঘটনার সময় তো আমি ঘুমাচ্ছিলাম। আমার জানামতে, ওই সময় রাফিদের মা সেলিমা বেগম ও ছোট বোন আতকিয়া ফাহমিদ নওশিন ঘরেই ছিল।’ জানা গেছে, রাফিদের বাবা ওয়ালিউল্লাহর কলাবাগান ডলফিন গলির পাশে একটি মুদিদোকান রয়েছে। মা সেলিমা বেগম প্রতি শনিবার দুপুরে কাঁঠালবাগান আল আমিন রোডের একটি মসজিদে তাবলিগে যান। রাফিদের বাবা ওয়ালিউল্লাহ বলেন, গত শনিবার তার মা ও বোন বাসায় ছিলেন না। ওই দিন বেলা সোয়া ৩টার দিকে বাসায় ফিরে রাফিদকে জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন তার মা। দুই মেয়ে এক ছেলের মধ্যে রাফিদ সবার ছোট।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর