বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আদালত থেকে দৃষ্টি সরাতে অপহরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আদালত থেকে দৃষ্টি সরাতে অপহরণ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনী সংক্রান্ত রায় থেকে জনগণের দৃষ্টি সরাতেই বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করা হয়েছিল। যখনই সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ঘটনা ঘটেছে তখনই এমন ঘটনা ঘটে। ষোড়শ সংশোধনীর রায়টি দেওয়ার পরই এ ঘটনাটি ঘটেছে। এটি একটি ডাইভারশন। গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে  বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এ অভিযোগ করেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফরহাদ মজহারকে আজকে যদি না পাওয়া যেত আমরা কী করতাম? কী করার ছিল? কারণ পুলিশ যেভাবে কথা বলছে, এতে বোঝা যাচ্ছে অপরাধ ফরহাদ মজহারেরই। মির্জা ফখরুল বলেন, আমি অবাক হয়ে যাই। সরকার কোনো ঘটনারই কোনো প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতে পারছে না। ফরহাদ মজহার একজন দেশপ্রেমিক, শক্ত বাংলাদেশি, দার্শনিক, জনগণের অধিকার নিয়ে কাজ করেন। সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা সব সময় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলছি। অথচ আমরাই সবচেয়ে বড় ভিকটিম। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার যে অবস্থা তাতে আমরা যারা বিরোধী দল করি তারা এটার সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে পার্লামেন্টকেই যখন তারা ক্ষমতা দিল, তখন আতঙ্কিত হয়ে উঠেছিলাম। কারণ বিচারকরা সঠিক বিচার করতে পারবে কিনা সন্দেহ থাকবে। এখন বিচারপতিরা স্বাধীন হয়ে কাজ করতে পারবেন। তাদের মধ্যে ভীতি থাকবে না। তবে উচ্চ আদালতের কিছুটা স্বাধীনতা এলেও নিম্ন আদালতের অবস্থা আরও খারাপ। আমরা যারা প্রতিনিয়ত কোর্টে যাচ্ছি তারা জানি সরকার কীভাবে নিম্ন আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। সরকারের নির্বাচনী প্রচারণার সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার মুখে নির্বাচনের ধুয়া তোলার চেষ্টা করছে। একটা আবহ তৈরি করতে চাচ্ছে বলে বোঝাতে চাচ্ছে। কিন্তু অন্যদিকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিরোধী দলকে দমনে লিপ্ত রয়েছে। যারা ভিন্ন মত পোষণ করছে, সরকারের কাজের সমালোচনা করে, তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন আরও বেড়েছে। আমরা কখনো চিন্তাও করিনি কবি ফরহাদ মজহারের মতো একজন মানুষকে অপহরণ করা হবে। এটি একটি অবিশ্বাস্য বিষয়। কিন্তু আসলে এটি অবিশ্বাস্য নয়। কারণ সরকার আমাদের অনেক নেতাকেই গুম করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, শিগগিরই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জনগণের সামনে আসবেন। আশা করছি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা এটিকে মেনে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন। তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে না এটা তারা বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছে। আর ক্ষমতায় না আসতে পারলে কী হবে তা তাদের সাধারণ সম্পাদক বলে দিয়েছেন। সে জন্যই তারা আবারও অবৈধভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চায়। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারি না সরকার কী চায়? তারা কি এ দেশকে ইরাক, আফগানিস্তান বানাতে চায়? কিন্তু তা হতে দেওয়া হবে না। এদেশের মানুষ তা হতে দেবে না।

সর্বশেষ খবর