বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

সীতাকুণ্ডে অজ্ঞাত রোগে ৯ শিশুর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডু উপজেলার সোনাইছড়ি ত্রিপুরা পল্লীতে অজ্ঞাত রোগে এক সপ্তাহে ৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল একদিনেই চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার প্রথম এক শিশু মারা যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ এটিকে ভাইরাস জনিত জ্বর বলে আখ্যা দিয়েছে।

সূত্র জানায়, এ রোগের নাম এখনো জানা যায়নি। তাই সংক্রামক ব্যাধি হওয়ায় ওই এলাকার আরও ৪০ জন শিশুকে নগরের ফৌজদারহাট বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতাল এবং চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তা ছাড়া গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরে তিনি বলেন, ‘এই শিশুদের প্রথমে জ্বরের সঙ্গে শরীরে বিচি ওঠে। এরপর কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়ে তারা মারা যায়। খবর পেয়ে আজ ঘটনাস্থলে যাই। এখান থেকে আরও ৪০ শিশুকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এটাকে আমরা অজ্ঞাত রোগ বলছি। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ দল আসবে। তারা সিদ্ধান্ত দেবেন।’ বিআইটিআইডি এর পরিচালক ডা. এম এ হাছান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আক্রান্ত শিশুগুলোর রোগ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছি। এখন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’ চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ জানান, চমেক হাসপাতালে ১১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে জরুরিভিত্তিতে একজনকে শিশু আইসিইউতে ও বাকিদের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে ভর্তি করা হয়। তিনি বলেন, তারা এক ধরনের ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত। জ্বর আসার পর তারা কোনো চিকিৎসা না নিয়ে স্থানীয়ভাবে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খায়। ফলে জ্বরটি মারাত্মক আকারে ধারণ করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ত্রিপুরা পল্লীর সবাই অত্যন্ত দরিদ্র। অনেক বড় একটি পাহাড়ে ত্রিপুরা পল্লীর অবস্থান। উন্নয়ন ও নাগরিকসেবার কোনো আলো সেখানে নেই। পাহাড়ে মাটির তৈরি বাড়িতেই তাদের বসবাস। অনেকটা উপজাতিদের মতই জীবনযাপন। মাটির বেড়া আর টিনের ছাদ। তারা তাদের মতই করে জীবনধারণ করে। তাদের জীবিকা পাহাড় কেন্দ্রিক। সেখান থেকে পাহাড়ি বাংলা কলা, মৌসুমি নানা ফলমূল ও জ্বালানি বৃক্ষ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে। পাহাড়ে কয়েকটা দোকান থাকলেও তেমন সমৃদ্ধ নয়।

সর্বশেষ খবর