বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের সহ সম্পাদক পেতে শেষ মুহূর্তে দৌড়ঝাঁপ

রফিকুল ইসলাম রনি

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক পদ পেতে শেষ মুহূর্তে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। তারা দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদকসহ দলের শীর্ষ নেতাদের বাসাবাড়ি ও অফিসে ধরনা দিচ্ছেন। শুরু করেছেন তদবির। আজ বিকালে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এমনকি বিভিন্ন সম্পাদক আজ তাদের পছন্দের নাম দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে জমাও দিতে পারেন। দলের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। দলীয় সূত্রমতে, অতীতে জীবনবৃত্তান্ত জমা নিয়ে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সহ-সম্পাদক মনোনয়ন দেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এবার প্রক্রিয়াটা ভিন্ন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সম্পাদকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিটি করতে। এতে করে পদপ্রত্যাশীরা কিছুটা শঙ্কাও করছেন। তারা বলছেন, আগে সিভি যাচাই-বাছাই করে যে প্রক্রিয়ায় সহ-সম্পাদক মনোনয়ন দেওয়া হতো, তাতে যোগ্যরাই পদে আসতেন। কিন্তু এবার যোগ্য ব্যক্তির চেয়ে নেতাদের অনুগতরাই প্রাধান্য পেতে পারেন। দলের সহ-সম্পাদক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আজ অনুষ্ঠেয় সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় অন্যতম এজেন্ডা রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে তালিকা জমা দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ আজ জমা দেবেন।  আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৫-এর ১-এর ক ধারা অনুসারে, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর প্রত্যেক পদের বিপরীতে অনূর্ধ্ব পাঁচজন করে সহ-সম্পাদক থাকতে পারবেন। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সম্পাদকমণ্ডলীর সংখ্যা ১৯ জন। সে হিসাবে অনূর্ধ্ব ৯৫ জন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হওয়ার কথা। কিন্তু সর্বশেষ গত কমিটিতে এ নিয়ম মানা হয়নি। দু-তিন দফায় ঘোষিত সহ-সম্পাদকদের সংখ্যা সর্বশেষ কতজনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যেই। তবে এবারের সহ-সম্পাদক নিয়োগ ১০০’র মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আজকের বৈঠকে সহ-সম্পাদক নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হতে পারে। গত সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এ নিয়ে আলোচনা হলেও চূড়ান্ত হয়নি। কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এ প্রসঙ্গে জানান, তিনি আগেই কৃষি ও সমবায় বিভাগের উপ-কমিটির নাম জমা দিয়েছেন। আজকের সভায় এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন বলেন, নিয়মিত কয়েক দিন পরপর সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক হয়। এ বৈঠকে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড কোনটা হয়েছে বা কোনটি এখনো হয়নি তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। মূলত দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা কতটুকু বাস্তবায়ন হলো তার পর্যালোচনা করা হয়। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, সহ-সম্পাদক নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হচ্ছে। এখনো কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। সবার মতামতের ভিত্তিতেই দলের উপ-কমিটিগুলো গতিশীল করতে সহ-সম্পাদকদের নাম চূড়ান্ত করা হবে।  তবে পদপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, প্রতিবারই যোগ্যরা নন, নেতাদের অনুগত ও নানা কারণে অনেকে সহ-সম্পাদক হয়েছেন। তারা বলেন, আশা করি ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক অবদান, অতীত কর্মকাণ্ড এবং বর্তমান অবস্থান পর্যালোচনাপূর্বক কেন্দ্রীয় নেতাদের সুপারিশের সমন্বয়ে সহ-সম্পাদক নিয়োগ দেবে এবার। তাহলেই যোগ্যরা মূল্যায়িত হবে।

সর্বশেষ খবর