শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

সবাই সম্পৃক্ত না হলে এত দুর্নীতি কেন : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সবাই সম্পৃক্ত না হলে এত দুর্নীতি কেন : অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সবাই দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণেই দেশ আজ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। গতকাল রাজধানীতে দুদকের হটলাইন ১০৬ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অফিস চলাকালীন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত যে কোনো ফোন থেকে বিনা খরচে দুদকের হটলাইন ১০৬-এ ফোন করে দুর্নীতির অভিযোগ দেওয়া যাবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিতে আমরা সবাই নিমজ্জিত। সবাই যদি নিমজ্জিত না থাকত তাহলে দুর্নীতি হতো না। যাদের ক্ষমতা আছে তারাই দুর্নীতি করে। যদি এতে সবাই অংশ না নেয় তাহলে দুর্নীতি হয় কীভাবে? পরোক্ষভাবে আমরা সবাই দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত। পরিস্থিতি এখন এমন যে, অনেক সময় বাধ্য হয়ে দুর্নীতিতে জড়াতে হয়। তিনি বলেন, ‘আমি তখন একজন অবসরপ্রাপ্ত সাধারণ নাগরিক। ঠিক করলাম, আমার বাড়িতে ন্যাচারাল গ্যাস কানেকশন প্রয়োজন, তখন আমি তিতাস গ্যাসকে বললাম, তোমরা এক দিন এসে আমার এই কানেকশনটা দিয়ে যাও। এরপর তারা এলো, আমার বাসায় কানেকশনটা দিয়ে দিল। তখন কোম্পানির যে কর্মকর্তা সেখানে অবস্থান করছিলেন যাওয়ার সময় তিনি বললেন, স্যার আমাদের কিছু বখশিশ দিতে হয়। তখন আমি ভেরি সারপ্রাইজড, কোনো দিন বখশিশ দিইনি। তখন আমি উপলব্ধি করলাম যে আমি তো এখন সাধারণ নাগরিক। তখন কিছু বখশিশ দিলাম। এর আগে ফিলিপিন্সে চাকরি করার সময় বাসা ভাড়া নিয়ে গ্যাস সংযোগের জন্যও বখশিশ দিতে হয়েছিল।’ মুহিত বলেন, বাংলাদেশে দুর্নীতির সংস্কৃতি ছিল না। এটা একটা গোপনীয় বিষয় ছিল। একটু শরমের বিষয় ছিল। এক সময় দুদকের এক চেয়ারম্যান দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। জিহাদের ভবিষ্যৎ সব সময় অন্ধকার হয়। কারণ জিহাদ একটি অন্য জিনিস। অব্যশ্যই ধর্মযুদ্ধে এসব ছিল, এখন আর নেই। জিহাদের নাম নিয়ে কোনো পরিবর্তন হয় না। দুদক ও তদন্তকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তদন্ত করবেন ভালো কথা, তবে জিহাদি হবেন না। জিহাদি হলে তদন্তের কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায়। সরকারি চাকরিতে বেতন কম বলে দুর্নীতি বাড়ার অভিযোগ ছিল এক সময়। এখন সেই পরিস্থিতি বদলেছে। আমি আশাবাদী, আমার ধারণা, আট থেকে ১০ বছর পর আজকে যে দুর্নীতি, এই অবস্থার পরিবর্তন আসবে। সাধারণ মানুষেরও অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। দুর্নীতি যে করতে হবে এই মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মো. নাসির উদ্দিন, কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম এবং দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর