রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

ছয় সিটিতে জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে আওয়ামী লীগ

রফিকুল ইসলাম রনি

ছয় সিটিতে জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে আওয়ামী লীগ

ঈদুল আজহার পরপরই ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে মাঠে নামবে আওয়ামী লীগ। সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং দলকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনতে তৃণমূলকে প্রস্তুত করাই এবারের লক্ষ্য। এ ছাড়া জেলা-উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনসহ দলীয় সদস্য সংগ্রহ অভিযান জোরদার করা হবে। এবার ঈদ-পূর্ব রাজনীতি নিয়ে ভাবনা নেই আওয়ামী লীগে। বন্যার কারণে সবকিছুতেই ভাটা পড়েছে। দলের একাধিক নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 

দলীয় সূত্র মতে, ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে টানা তৃতীয় মেয়াদে বিজয়ী হতে  চায় দলটি। এ লক্ষ্য অর্জনে দলকে ঢেলে সাজাচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন ক্ষমতাসীনরা। জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে। এরপর গাজীপুর সিটিতে। পর্যায়ক্রমে সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হবে। বিগত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কীভাবে ছয় সিটিতে দলকে জয়ী করা যায় সে জন্য এখন থেকেই প্রার্থী বাছাই ও ভোটারদের মন জোগাতে মাঠে নামবে ক্ষমতাসীনরা। এ জন্য সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলোর চিত্র তুলে ধরে আগেভাগেই প্রচারণা শুরু করা হবে। প্রচারে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের পরিকল্পনা আছে আওয়ামী লীগের। এ কারণেই দলীয় কার্যালয়গুলোকে সেভাবে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহারে দলের নেতা-কর্মীদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। আর সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জনআকাঙ্ক্ষার গতিপ্রকৃতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। সেভাবেই পরবর্তী নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করতে কাজ করছে বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের আসন ভাগাভাগি ও জোটের পরিধি বাড়ানোর বিষয়েও দলে আলোচনা চলছে। দলীয় সূত্র মতে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যে প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। তারা নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। নিজেদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি মিটিয়ে ফেলছেন। সরকারের উন্নয়নগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরছেন। কেন্দ্রীয় নেতারাও নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক সফরে বের হবেন।

তৃণমূলের দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কোরবানির ঈদের পর আমাদের সাংগঠনিক সফর শুরু হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আমরা একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। এক্ষেত্রে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যেই যাবে, সে যত শক্তিশালীই হোক না কেন; তার আর দলে থাকার সুযোগ থাকবে না। এ ধরনের একটা কঠিন সিদ্ধান্ত আছে আমাদের। নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের নতুন সদস্য বাড়ানোর কার্যক্রমও চলছে। এ জন্য নতুন ভোটার ও নারী ভোটারদের গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আর ভিন্ন ভিন্ন পেশা ও ধর্মমতের ভোটারদের দলে ভিড়াতেও কাজ শুরু করেছে ক্ষমতাসীনরা। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগস্ট মাস বাঙালি জাতির শোকের মাস। এ মাসে শোকের কর্মসূচি ছাড়া সাংগঠনিক কর্মসূচি যেমন সদস্য সংগ্রহ, নবায়ন, সম্মেলন বা কমিটি গঠন করা হয় না। এ ছাড়া বর্তমানে বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা হয়েছে। এসব কারণে ঈদের পর আমাদের সাংগঠনিক সফর শুরু হবে। জেলায় জেলায় বর্ধিত সভা, কর্মিসভা ও উঠান বৈঠক করা হবে। এই সফরের মাধ্যমে দলকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনতে উপযুক্ত করা হবে।

সর্বশেষ খবর