রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

সরকারের উচিত পদত্যাগ করা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের উচিত পদত্যাগ করা

দেশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতেই ক্ষমতাসীনরা প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে আওয়ামী লীগ যে ধরনের কথাবার্তা বলছে, তা আইনের শাসনের বিরোধী। আদালত অবমাননার শামিল। তাদের প্রত্যেক নেতা প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করে যে অশালীন ভাষায় কথাবার্তা বলছেন, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। এর মাধ্যমে আদালত অবমাননা করা হচ্ছে। এ রায়ের পর সরকারের উচিত পদত্যাগ করা।’ গতকাল সকালে সদ্য কারামুক্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুকে নিয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মির্জা ফখরুল। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে চলমান ইস্যু নিয়ে কথা বলেন তিনি। এ সময় জিয়ার কবর প্রাঙ্গণে নেতা-কর্মীদের ঢল নামে। নেতা-কর্মীদের নিয়ে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে বিশেষ মোনাজাত করেন বিএনপি মহাসচিব। তিন মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে ১৮ আগস্ট বরকত উল্লাহ বুলু কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। এর আগে ১৮ মে নাশকতার ১৩ মামলায় বুলু আত্মসমর্পণ করলে জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত। জিয়ার কবরে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বরকত উল্লাহ বুলু ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব-উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মীর সরাফত আলী সপু, কাজী আবুল বাশার, আহসান উল্লাহ হাসান, মামুন হাসান, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, গোলাম মাওলা শাহিন, আকরামুল হাসান, মঞ্জুরুল আজিম সুমন, মাহফুজুল হক জাবেদ, মাসুদ রানা, আমির হোসেনসহ কয়েক হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর বিএনপি যে স্বপ্ন দেখেছিল সেটি উল্টে গেছে— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা যে কথাবার্তা বলছেন, তারা নিজেরাই জানেন না কী বলছেন। মূল বিষয়টা হচ্ছে, এ রায়ের মাধ্যমে তাদের যে আসল চেহারা, তারা দেশ কীভাবে চালাচ্ছেন, সরকারের আসল চেহারা পরিষ্কার বেরিয়ে এসেছে। জনগণ  সেটা বুঝে গেছে। এ কারণে তারা এসব অমূলক কথাবার্তা বলছেন।’

নির্বাচন কমিশনের চলমান সংলাপ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) তার বক্তব্যেই বলে দিয়েছেন, এ সংলাপে খুব একটা ফল পাওয়া যাবে না। কারণ তারা বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো সংলাপ হচ্ছে না, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ হচ্ছে। এখানে মূল যে সংকট রয়েছে, সেই সংকট সমাধানে এটা কোনো কাজ করবে না।’

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এটা কোনো দিন জীবনেও শুনিনি, যারা প্রশাসনে আছেন, দেশ শাসনে আছেন, কোনো একটা রায় নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলাপ করা— এমন কোনো দৃষ্টান্ত বোধহয় কোথাও নেই। তারা চেষ্টা করছেন বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করার। প্রধান বিচারপতিকে প্রভাবিত করার। এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। এর মাধ্যমে তারা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি অত্যন্ত কলঙ্ক বলে মনে হবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর