মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, অনতিবিলম্বে গণহত্যা বন্ধ করা উচিত। আন্তর্জাতিক বিশ্ব আজ ধিক্কার দিচ্ছে। গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃদ্ধ, যুবক, নারীদের পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা হতে পারে না। গতকাল দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলমের চারটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। ‘বিলম্বে হলেও প্রধানমন্ত্রীর বোধোদয় হয়েছে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, লন্ডনে বসে খালেদা জিয়া টুইটারে একটা বিবৃতি দিয়েছেন। তার এমনকি রোগ হয়েছে, যে কারণে দেশে আসতে পারছেন না? মানবিক গুণাবলী থাকলে সবকিছু ত্যাগ করে তিনি এখানে এসে সর্বহারা রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতেন। যে দলের নেত্রীর খোঁজ নেই সেই দলের নেতা হিসেবে কথা সাজে না। তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বিজিবি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢুকতে দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন আশ্রয় দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে সেখানে ছুটে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে রোহিঙ্গারা আবেগে আপ্লুত হয়েছেন। লন্ডনের একটি নাম করা টেলিভিশন মাদার অব হিউমেনিটি খেতাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভূষিত করে নিউজ প্রচার করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে একটি দল আছে যারা অং সান সু চির সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য দাঁড় করিয়েছে। চিন্তা করে দেখেন ওরা কত নোংরা। এদের চিন্তা চেতনা কত নিচু। আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা বলেন, আমাদের দেশের কিছু লোক আছে যাদের দল নেই। দলহীন এসব লোক সুযোগ পেলে সরকারের বিপক্ষে এবং বিএনপির পক্ষে দাঁড়ায়। তারা বলে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা তেমন না। কূটনৈতিক তৎপরতা না থাকলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিন্দা করল কীভাবে। ইইউ বলেছে মিয়ানমার একদিকে বাণিজ্যিক সুবিধা নেবে অন্যদিকে গণহত্যা করবে তা হতে পারে না। মিয়ানমারের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক বিশ্ব এখন গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। রোহিঙ্গা নির্যাতনের কথা তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ১৬ কোটি মানুষের দেশ। অতি ঘনবসতিপূর্ণ। কিন্তু আমাদের হৃদয় আছে। আমাদের মন আছে। এসব দেখে আমাদের একাত্তরের স্মৃতি ভেসে ওঠে। কীভাবে আমাদের মা বোন সেদিন ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সে অভিজ্ঞতার আলোকেই মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে এদেরকে আমরা বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছি।
খালেদা জিয়া নিখোঁজ আছেন এমন মন্তব্য করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এসেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন, ইন্দোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন, জাতিসংঘে আজ এটা আলোচনা হবে। পত্রিকায় দেখলাম জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে একটা সিদ্ধান্ত দিয়েছে, যেটাতে কেউ তার ভেটো প্রদান করেনি। কিন্তু কোথায় খালেদা জিয়া। তিনি হারিয়ে গেছেন। সংস্কৃতি সচিব ইব্রাহিম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন প্রমুখ। মুক্তধারা থেকে প্রকাশিত জাহাঙ্গীরের চারটি বই হলো— বঙ্গবন্ধুর মর্মকথা ২ খণ্ড, আর্থ সামাজিক উন্নয়নে জ্বালানি খাতের ভূমিকা : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ, সমসাময়িক সাধারণ জ্ঞান, চলমান অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য।