শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

দলমতের ঊর্ধ্বে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ধরে রাখতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দলমতের ঊর্ধ্বে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ধরে রাখতে হবে

এস এম এ ফায়েজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এস এম এ ফায়েজ বলেছেন, শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমনটি কোনো দিন ছিল না। কোনোভাবেই এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় এরই মধ্যে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে দ্রুত বেরিয়ে এসে তার মর্যাদা সমুন্নত করতে হবে। আর কোনো বিকল্প নেই। এক কথায়, দল-মতের ঊর্ধ্বে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ধরে রাখতে হবে। অধ্যাপক ফায়েজ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, দল-মত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম এ পর্যন্ত যতটা ক্ষুণ্ন হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবতে হবে। এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নেতিবাচক ঘটনাগুলো ঘটে গেছে তা থেকে বের হওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ক্ষতি আমাদের আগেই শনাক্ত করে এর প্রতিবাদ করা উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি বলে আজ পত্রিকা পড়ে জানতে পেরেছি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০০ শিক্ষক দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পেয়েছেন। এস এম এ ফায়েজ বলেন, শিক্ষকদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ বা এ বিষয়ে সচেতনতাকে নেতিবাচকভাবে দেখার সুযোগ নেই। শিক্ষকরা সমাজের সবচেয়ে সচেতন অংশ। পৃথিবীর সব দেশেই শিক্ষকদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা থাকে। কিন্তু এর প্রতিফলন যাতে কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের ওপর না ঘটে তা  নিশ্চিত করা দরকার। আবার রাজনৈতিক সচেতনতা থাকার অর্থ এই নয় যে, তা সবসময় শিক্ষকদের কাজকর্মে প্রকাশ পাবে। শিক্ষকরা একাডেমিকভাবেই তাদের কাজকর্ম করবেন। এর মধ্য দিয়েই একজন শিক্ষকের পরিচয় প্রকাশ পাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন বিভিন্ন প্যানেলের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তখন রাজনৈতিক বিষয় তুলনামূলক বেশি মাত্রায় প্রতিফলিত হতে পারে। নিয়োগ প্রাপ্তিও ক্ষেত্রে শিক্ষকদের রাজনৈতিক পরিচয় এতই গুরুতর হয়ে উঠেছে যে, তাতে ‘কোয়ালিটি সাফার’ করছে। শিক্ষক নির্বাচনের ক্ষেত্রে মেধাবী হয়েও প্রার্থী বাদ পড়ছে। জনমনে ধারণা তৈরি হয়েছে, রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকার পরও একজন শিক্ষার্থী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন না। এ পরিস্থিতিতে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। দুঃখজনক যে, গণমাধ্যমগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে ‘কম্প্রোমাইজ’ করা হচ্ছে এমন খবরও এসেছে। মানুষের দৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা এখন অনেক নিচে নেমে গেছে। এর প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও বিশ্ববিদ্যালয়টি নিয়ে দারুণ হতাশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, আমি মনে করি এখানে মেধা, মেধা এবং কেবলমাত্র মেধা প্রাধান্য পাবে। আর এমন না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যর্থ হবে। এটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গণ্য হবে না।

সর্বশেষ খবর