রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

দীর্ঘতম সফরে এশিয়ার পথে ট্রাম্প


দীর্ঘতম সফরে এশিয়ার পথে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম এশিয়া সফর শুরু করেছেন। আজ দিনের কোনো এক সময় তার জাপানের রাজধানী টোকিওতে পৌঁছার কথা রয়েছে। দুই দিনের জাপান সফর শেষে ক্রমান্বয়ে তিনি দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্স সফরে যাবেন। ট্রাম্পের এশিয়া সফর ১২ দিন স্থায়ী হবে। গত ২৫ বছরের মধ্যে এটা হচ্ছে ক্ষমতাসীন (সিটিং) কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের দীর্ঘতম এশিয়া সফর। এর আগে ১৯৯২ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ (সিনিয়র বুশ) এত দীর্ঘ সময়ের জন্য অঞ্চলটি সফরে এসেছিলেন। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ঘিরে কোরীয় উপদ্বীপে বিরাজমান চড়া উত্তেজনার মধ্যেই ট্রাম্পের এ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অঞ্চলটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতে তাই স্বাভাবিকভাবেই উত্তর কোরিয়া ইস্যু ও বাণিজ্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এশিয়া সফরের উদ্দেশে ওয়াশিংটন থেকে উড়াল দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সস্ত্রীক গতকাল (যুক্তরাষ্ট্র সময় শুক্রবার) যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাজ্য হাওহাইতে পৌঁছান। সেখানে মার্কিন নৌঘাঁটি পার্ল হারবারে স্থাপিত ইউএসএস আরিজোনা স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করেন ট্রাম্প। এ ছাড়া সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ডের এক ব্রিফিংয়েও অংশ নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মার্কিন নৌবাহিনীর অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস (তিনি ওই কমান্ডের কমান্ডারও) এ ব্রিফিং দেন। হাওহাই থেকেই ট্রাম্প স্ত্রী মেলানিয়াসহ প্রথমে জাপানের টোকিওতে পৌঁছাবেন। সেখান থেকে তিনি দক্ষিণ কোরিয়া যাবেন। জাপানের রাজধানী টোকিওতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্বাগত জানাবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। দেশটিতে দুইদিন অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী আবের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তাদের মধ্যকার বৈঠকে উত্তর কোরিয়া ইস্যুই প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে কারণ দেশটি জাপানের ওপর দিয়ে এখন পর্যন্ত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রশান্ত মহাসাগরে ছুড়েছে। তাই স্বভাবতই উত্তর কোরিয়ার উসকানিমূলক এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষিপ্ত ও ভীত দেশটি। উত্তর কোরিয়ার এমন আচরণ শক্তহাতে মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়েই প্রধানমন্ত্রী আবে গত মাসে অনুষ্ঠিত দেশটির আগাম সাধারণ নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছেন। জাপানের পর সফরের দ্বিতীয় পর্বে ৭ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। দেশটির রাজধানী সিউল সফরে ট্রাম্প কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রত্যাশী দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট মুন জা ইনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেশটির পার্লামেন্টেও ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে ট্রাম্প ও শিনজো আবের সঙ্গে এক ধরনের সাংঘর্ষিক অবস্থান রয়েছে দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্টের। এ বিবেচনায় ট্রাম্প-মুনের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিঃসন্দেহে বেশ গুরুত্ব বহন করছে। সিউলে একদিন অবস্থান করে ট্রাম্প ৮ নভেম্বর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনৈতিক জায়ান্ট চীন সফরে যাবেন। সেখানে দুদিন অবস্থানকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ছাড়াও অন্যান্য শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সফরের চতুর্থ ধাপে ট্রাম্প ১১ নভেম্বর চীন থেকে ভিয়েতনাম যাবেন। সেখান থেকে সফরের পঞ্চম ও শেষ পর্বে ১২ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফিলিপিন্সের ম্যানিয়ায় যাবেন। এদিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর শীর্ষ সংগঠন আসিয়ানের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক ডিনারে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। এর পরদিন ১৩ নভেম্বর সংগঠনটির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। এ ছাড়া একই দিন রাজধানী ম্যানিলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ট্রাম্প। একই দিন ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা। বিবিসি।

সর্বশেষ খবর