রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
জমজমাট বিপিএল

দুরন্ত সূচনা রংপুর রাইডার্সের

আসিফ ইকবাল, সিলেট থেকে

দুরন্ত সূচনা রংপুর রাইডার্সের

২৩ বলে ২ ছক্কা ও ৩ বাউন্ডারিতে অপরাজিত ৩৯ রান তুলে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন রবি বোপারা। ডানে ম্যাচ জয়ের পর ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে সমর্থকদের অভিনন্দনের জবাব দিচ্ছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর রাইডার্সের কর্ণধার সাফওয়ান সোবহান এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় —রোহেত রাজীব

টস করতে এসে ড্যারেন স্যামির সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে ওঠেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। হাসিখুশি মাশরাফিকে দেখে মনে হয়েছে কত নির্ভার! প্রতিপক্ষ রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচ, অথচ বাড়তি কোনো টেনশন নেই চোখেমুখে। এমনই সদা হাস্যোজ্জ্বল, অথচ দৃঢ় চরিত্রের মাশরাফি বিন মর্তুজা। যার ছোঁয়ায় কাচভঙ্গুর দলও উদ্দীপ্ত হয়ে জয়োচ্ছ্বাস করতে করতে মাঠ ছাড়ে। গতকাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটের আলোয় মাশরাফির উদ্দীপ্ত নেতৃত্বে উড়ন্ত সূচনা করেছে শিরোপাপ্রত্যাশী রংপুর রাইডার্স। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে রংপুরের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৮ বলে ২২ রান। টি-২০ ক্রিকেটীয় ফরম্যাটে আহামরি টার্গেট নয়; যদি ক্রিজে থাকেন দুই ড্যাসিং ক্রিকেটার রবি বোপারা ও থিসারা পেরেরা। যে কোনো পরিস্থিতিতে আস্থা রাখার মতো এই দুই ক্রিকেটার গতকাল চোখজুড়ানো স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের মন ভরিয়ে দিয়েছেন চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে। দুই বিদেশির দৃঢ়তায় রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে ৬ উইকেটের দুরন্ত জয় তুলে নিয়েছে রংপুর রাইডার্স। আসরে প্রিয় দলের শুভ সূচনা দেখেছেন রংপুর রাইডার্সের ফ্র্যাঞ্চাইজি বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান। দিনের প্রথম ম্যাচেই অবশ্য চমক উপহার দিয়েছে স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্স। উপুল থারাঙ্গা ও আন্দ্রে ফ্লেচারের দৃঢ়তায় ৯ উইকেটের আকাশসম ব্যবধানে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে সবাইকে।

সৌন্দর্যের ক্যানভাসে সবুজ কালিতে আঁকা সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। বাংলাদেশ তো বটেই, এশিয়ার অন্যতম সুন্দর ও নয়নাভিরাম স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটের আলোয় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলে মাশরাফির নেতৃত্বে রংপুর রাইডার্স। টস জিতে ড্যারেন স্যামির রাজশাহী কিংসকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান রংপুরের মাশরাফি। রাতের কুয়াশা কাজে লাগাতে নিজেই বোলিংয়ে আসেন এবং সুইংয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তুলে ছাড়েন মাশরাফি। কিন্তু ব্যর্থ ছিলেন বাকি পেসাররা। বিশেষ করে রুবেল হোসেন। ৪ ওভারের স্পেলে রুবেল রান দেন ৪৪ এবং মালিঙ্গা ৩৪ রান। রাজশাহী কিংসের ১৫৪ রানের অর্ধেকের রান বেশি আসে দুজনের ৮ ওভারে। মিতব্যয়ী ছিলেন মাশরাফি ও নাজমুল। মাশরাফি ৪ ওভারে ১৮ রানের খরচে সাজঘরে ফেরান ৪৭ রান করা রনি তালুকদারের উইকেট। নাজমুল ৪ ওভারে দেন ২০ রান। প্রথম ওভারে উইকেট পাওয়ার পরও সোহাগ গাজী আর বোলিং করেননি। অথচ ৫ রানের খরচে আউট করেন মুমিনুল হক সৌরভকে।

টার্গেট ১৫৫ রান। রাতের আলোয় জয় পেতে প্রয়োজন ওভারপ্রতি ৭.৭৫। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৫ ওভারে দুই ওপেনারকে হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পরে রংপুর। সেখান থেকে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৯.১ ওভারে ৭৫ রান যোগ করে দলের জয়ের ভিত শক্ত করে দেন মোহাম্মদ মিথুন ও শাহরিয়ার নাফিস। মিথুন খেলেন ৪৬ রানের ইনিংস এবং শাহরিয়ারের ব্যাট থেকে বেরোয় ৩৫ রান। ১১৩ রানে ৪ নম্বর উইকেটের পতনের পর সরল দ্যোলকের পিণ্ডের মতো দুলতে থাকে ম্যাচ। সেখান থেকে বোপারা ও পেরেরা পঞ্চম উইকেট জুটিতে ২১ বলে ২০০ স্ট্রাইক রেটে ৪২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে শুভ সূচনা দেন। বোপারা অপরাজিত থাকেন ৩৯ রানে। ২৩ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৩টি চার ও ২টি ছক্কা। থিসারার ২০ রানের অপরাজিত ইনিংসটি ১২ বলে সাজানো। ১৮ নম্বর ওভারে পেরেরা ২ চারে ১২ রান তুলে নিলে খেলা সহজ হয়ে যায়। ১৯ নম্বর ওভারের ৫ বলেই জয়ের প্রয়োজনীয় ১০ রান তুলে নিলে ৬ উইকেটের জয় তুলে হাসতে হাসতে মাঠ ছাড়ে রংপুর রাইডার্স।

সর্বশেষ খবর