সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনে দলগুলোর স্পষ্ট অঙ্গীকার চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনে দলগুলোর স্পষ্ট অঙ্গীকার চাই

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ—সিপিডি’র বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য- এসডিজি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে বলেছেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের সবার চেষ্টা করা উচিত— এই ব্যাপারে (এসডিজি) রাজনৈতিক অঙ্গীকার যেন স্পষ্ট, বলিষ্ঠ ও সুনির্দিষ্ট হয়। দেশ বরেণ্য এই অর্থনীতিবিদের মতে, নিরাপত্তা ও বিচারহীনতার বিষয় বড় ভাবে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, সে জিনিসটিকেও সামনে আনতে হবে। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে দেশের ছয়টি বেসরকারি সংস্থা যৌথভাবে আয়োজিত ‘এসডিজির আলোকে বাংলাদেশে দলিত জনগোষ্ঠীর অবস্থান’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপের সমাপনীতে সঞ্চালকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। নাগরিক উদ্যোগ, সিপিডি, নারী মুক্তির অভিযান, হেকস ইপের, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভস বাংলাদেশ এবং এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম বাংলাদেশ আয়োজিত এই নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি। মূল আলোচনায় অংশ নেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, মানবাধিকার নেত্রী ড. হামিদা হোসেন, অ্যারোমা দত্ত, সিপিডি’র বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী বনানী বিশ্বাস। এ ছাড়াও মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা। এই সংলাপে জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, এসডিজি অর্জন করতে হলে, জঙ্গি-সন্ত্রাসী, তেঁতুল হুজুর ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত টেকসই রাজনীতি দরকার। আইনের সুশাসন একটি টেকসই রাজনীতির জন্ম দেয়। আবার টেকসই রাজনীতি উন্নয়নের কথা বলতে হলে, মুক্তিযুদ্ধের চারনীতির একনীতির আলোকে অন্তর্ভুক্তির অর্থনীতি করতে হবে। টেকসই রাজনীতি নিশ্চিত করতে হলে, বাংলাদেশে আর অস্বাভাবিক সরকার হবে না। আগুন যুদ্ধ ও জঙ্গি তাণ্ডব হ্বে না, তার রাজনৈতিক গ্যারান্টি অর্জনের মধ্যদিয়ে টেকসই রাজনীতি হবে। তিনি বলেন, দার্শনিক দারিদ্র্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সংবিধানের চারনীতির ওপর আস্থা রাখুন। ভরসা রাখুন। ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র এবং গণতন্ত্রে ভরসা রাখতে হবে। এখানে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই সমাজতন্ত্রের কথা বলতে হবে। তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে দারিদ্র্য কমেছে, বৈষম্য বেড়েছে। বৈষম্য দূর করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। দুটোই বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। এ জন্য পিছিয়ে পড়া দলিত, বঞ্চিত ও জনগোষ্ঠীকে সামনে আনতে কোটা পদ্ধতি চালু হয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০টি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। এসডিজি বাস্তবায়নের পরীবিক্ষণ হিসেবে গণমাধ্যমে এসডিজি সেল থাকা উচিত। এই সেল দেখাবে সরকার কতটুকু করতে পেরেছে, কতটুকু পারেনি। সিপিডি বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশে বৈষম্যবিরোধী আইন, যেটা বহুদিন ধরে আটকে রয়েছে। এই আইন যেন এই সরকারের আমলে খুব দ্রুততার সঙ্গে পাস হয়, তা আমরা দেখতে চাচ্ছি।

নিয়মনীতি অনেক হতে পারে কিন্তু বাস্তবায়ন হবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু প্রয়োজনীয় জিনিস হলো কাঠামো এবং নীতিতে পরিবর্তন। এটা যথেষ্ট করতে হলে— আমাদের একটি সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প কিছু নেই। সে জন্য আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের সবার চেষ্টা করা উচিত রাজনৈতিক অঙ্গীকার যেন এই ব্যাপারে স্পষ্ট এবং বলিষ্ঠ ও সুনির্দিষ্ট হয়, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির ভিতরে। আগামীতে এটা মনে রাখতে হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, দরিদ্রদের জন্য আলাদা কমিশন গঠনের প্রয়োজন নেই। তবে দেশ ও সমাজে অসাম্য বাড়ছে। তার মতে, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলেই এসডিজি বাস্তবায়ন হবে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক সুরক্ষায় সরকার ৫৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন এই অর্থনীতিবিদ।

সর্বশেষ খবর