বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
তীব্র রাজনৈতিক সংকট

জিম্বাবুয়েতে ক্ষমতা নিল সেনাবাহিনী

প্রতিদিন ডেস্ক

জিম্বাবুয়ের ‘ক্ষমতা’ দখল করেছে সেনাবাহিনী। আফ্রিকার এই দেশটিতে কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক সংকট চলছিল। এ অবস্থায় অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজধানী হারারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে ‘নিরাপদে ও সুস্থ’ আছেন বলে বিবিসি ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা জানিয়েছেন তিনি মুগাবের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি ইঙ্গিত দেন, ‘মুগাবে নিজের বাড়িতেই গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন, তবে ভালো আছেন।’ মঙ্গলবার মধ্যরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। সেখানে চিফ অব স্টাফ লজিস্টিক মেজর জেনারেল এস বি মোয়ো টেলিভিশনে এক বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি বলেন, ‘৯৩ বছর বয়সী মুগাবে ও তার পরিবার নিরাপদে ও ভালো আছেন। আমাদের একমাত্র টার্গেট মুগাবেকে ঘিরে থাকা অপরাধীরা। তাদের কারণেই দেশটিতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়। তাদের বিচারের আওতায় আনতে এই পদক্ষেপ।’ বলেন, এটি কোনো অভ্যুত্থান নয়। এই অভিযান সম্পন্ন হলেই দেশে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে বলে ওই বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেন সেনাবাহিনীর এই মুখপাত্র। প্রেসিডেন্ট মুগাবে গত সপ্তাহে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে বরখাস্ত করলে এই সংকটের সূচনা হয়। নানগাগওয়াকে এত দিন মুগাবের উত্তরসূরি ভাবা হলেও সম্প্রতি তার জায়গায় ফার্স্ট লেডি গ্রেসি মুগাবের নাম সামনে চলে আসে। মুগাবেপত্নীর সঙ্গে নানগাগওয়ার এই বিরোধে ক্ষমতাসীন দল জানু-পিএফে বিভক্তি তৈরি হয়। এদিকে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে নানগাগওয়াকে সরিয়ে দেওয়াকে ভালোভাবে নেয়নি সেনাবাহিনী।

ফার্স্ট লেডির কারণে সামরিক অভ্যুত্থান : স্ত্রী গ্রেসি মুগাবেকে ক্ষমতার স্বাদ দিতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে এনেছেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে। চার দশক ধরে ক্ষমতায় আছেন মুগাবে। তার পরেই ক্ষমতার মসনদে স্ত্রীকেই দেখতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই সরিয়ে দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে। এতেই জিম্বাবুয়ের রাজনীতির পারদ তুঙ্গে উঠতে থাকে। সরকারের একটি অংশও বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি। তাদের কথা, মুগাবে স্ত্রীর বশীকরণ হয়ে ভাইস প্রেসিডেন্টকে হঠাৎ সরিয়ে দিয়েছেন। আর গ্রেসি মুগাবে সম্পর্কে তাদের ধারণাও ভালো নয়। গ্রেসিবিরোধীদের অভিযোগ, তিনি অন্য দুনিয়ার মাটিতে পা রাখেন। বিপুল অর্থের কেনাকাটা করতে তিনি বিদেশে ছুটে যান। ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি যখন দেশকে গ্রাস করছে, দেশ ঋণে জর্জরিত তখন তিনি বিদেশে যান শুধু শপিং করতে। এজন্য তাকে স্থানীয়রা গুচি ব্র্যান্ডের নামের সঙ্গে মিলিয়ে ‘গুচি গ্রেসি’ নামে ডাকেন। অন্যদিকে বরখাস্ত হওয়া সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগওয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর। তারা তাকে ভীষণ সমর্থন করে। ফলে এই ভাইস প্রেসিডেন্টকে সরানোতেই সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে নিল। এএফপি, বিবিসি।

সর্বশেষ খবর