বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আট বিভাগে যাবেন জোটের নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আট বিভাগে জনসভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক            কার্যালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে ২০-দলীয় জোটের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে দলীয় সরকারের অধীনে তথা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়েও ঐকমত্য হয় জোটের বৈঠকে। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। বৈঠকসূত্র জানায়, জোটের শীর্ষ নেতাদের একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতেও নির্দেশনা দেন বিএনপি-প্রধান বেগম জিয়া। মেয়াদের তিন মাস আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া দাবির পক্ষে জোরালো জনমত গড়ে তোলা হবে বলেও বৈঠকে জানানো হয়। সরকার দাবি না মানলে রাজপথে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ারও আহ্বান জানান বেগম জিয়া। জানা গেছে, রংপুরসহ ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও যাবে বিএনপি। এ ক্ষেত্রে রংপুরে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জোটের নেতারা সফর করবেন। তবে কী প্রক্রিয়ায় হবে তার কৌশল শিগগিরই নির্ধারণ করা হবে। জোটপ্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইবেন ২০ দলের নেতারা। এ ছাড়া ডিসেম্বরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০-দলীয় জোট সমর্থিত আইনজীবীদের মহাসমাবেশে বেগম খালেদা জিয়ার যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে এ কর্মসূচি ডাকা হবে।

চার মাস পর ২০-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। লন্ডন যাওয়ার আগে জুলাইয়ে তিনি সর্বশেষ বৈঠক করেছিলেন জোটের নেতাদের সঙ্গে। রাত ৯টায় শুরু হওয়া বৈঠকটি দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলে। এতে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সমস্যা ও নির্বাচনের বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীসহ ১৭টি শরিক দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। তবে কল্যাণ পার্টি ও পিপলস লীগের নেতারা অনুপস্থিত ছিলেন। উপদলীয় কোন্দলে বিভক্ত নেতৃত্বের কারণে জোটের শরিক লেবার পার্টির কোনো অংশকেই এ বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে খেলাফত মজলিশের মাওলনা মুহাম্মদ ইসহাক, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) আন্দালিব রহমান পার্থ, জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা আবদুল হালিম, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ড. রেদোয়ান আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের অ্যাডভোকেট এম এ রকীব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) খোন্দকার গোলাম মুর্তজা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ইসলামিক পার্টির আবু তাহের চৌধুরী, জমিয়তে উলামা ইসলামের মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাইফুদ্দিন মণি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। লেবার পার্টির একাংশের মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহদী, যুগ্ম-মহাসচিব শামসুদ্দিন পারভেজ, মাহমুদ খান, আহসান হাবিব ইমরোজ, রামকৃষ্ণ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে গুলশান কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

৫ নভেম্বর লেবার পার্টির মধ্যে পাল্টাপাল্টি গ্রুপিংয়ে দুই নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়। একটি অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। ইরান তার মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদীকে সরিয়ে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. ফরিদ উদ্দিনকে পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মনোনীত করেন। অন্য অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী। মেহেদী ইরানকে বহিষ্কার করে ভাইস চেয়ারম্যান এমদাদুল হক চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোনীত করেন। ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল চারদলীয় জোটকে সম্প্রসারণ করে ২০-দলীয় জোট গঠিত হয়।

সর্বশেষ খবর