বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

১৬২ কারখানার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন অ্যালায়েন্সের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বহুল আলোচিত রানা প্লাজা ভবন ধসের পরও পোশাকশিল্প কারখানার সংস্কারকাজে সন্তোষজনক অগ্রগতি না হওয়ায় ১৬২টি কারখানার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেইফটি।

সংস্থাটি জানিয়েছে, এই পোশাক কারখানাগুলো জোটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ওয়ালমার্ট, টার্গেট, গ্যাপ, জেসিপ্যানিসহ ২৯টি ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের পোশাক তৈরির কেনার আদেশ পাচ্ছে না। তবে অ্যালায়েন্সের ক্রেতা জোটের সদস্য কারখানাগুলো ৮৫ শতাংশ ত্রুটি সংশোধন শেষ করেছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ ছিল উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেরামত কাজ। গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থ বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশকালে এসব কথা বলেন অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যালায়েন্সের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ স্কট লারসেল, ডেপুটি ডিরেক্টর পল রিগবি, ডিরেক্টর অব অপারেশন্স কামরুন্নেসা বাবলি। ওই সংবাদ সম্মেলনে জেমস এফ মরিয়ার্টি অ্যালায়েন্স অধিভুক্ত ২৩৪টি কারখানা সংশোধনী কর্মপরিকল্পনায় মেরামত কাজ শেষ করেছে জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের মেরামত কাজের ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। যার ভিতরে ৮০ শতাংশ উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেরামত কাজ (যেমন ফায়ার ডোর স্থাপন ও কলাপসিপল গেট সরিয়ে ফেলা) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

 আর যেসব কাজ বাকি রয়েছে সেগুলো ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ হবে।’

তিনি বলেন, ‘কারখানা মালিকরা যে কঠোর পরিশ্রম করছেন, তার সুফল তারা এখন পাচ্ছেন। আগামী বছর অ্যালায়েন্সের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে। তখন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে। একটি স্বাধীন “প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো”র হাতে আমাদের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে চাই। যেখানে বাংলাদেশ সরকার, বিজিএমইএ ও অন্য অংশীদাররা থাকবে।’

কারখানার নিরাপত্তা বাড়ানোর কারণে পোশাক মালিকদের ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় বাড়লেও তারা সে অনুযায়ী আমেরিকার বাজারে দাম পাচ্ছেন না— সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মরিয়ার্টি বলেন, ‘এখন ট্রানজিশনাল পিরিয়ড চলছে। বিদেশি বায়াররা উপলব্ধি করছে বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নত হয়েছে। আমি আশা করি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকলে তারা ভালো মূল্য পাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অ্যালায়েন্সের ৬৫৮টি সদস্য কারখানায় কাজ করেন ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৫৬৬ জন শ্রমিক। তার মধ্যে অধিকাংশকেই প্রাথমিক অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রায় ২৭ হাজার নিরাপত্তাকর্মীকে অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে অ্যালায়েন্স। ১৭১টি কারখানায় গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সেইফটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যালায়েন্সের সদস্য পোশাক কারখানার সংখ্যা ৭৮৫টি। তার মধ্যে সচল আছে ৬৫৮টি। এর মধ্যে ২৩৪টি কারখানা অগ্নি, বৈদ্যুতিক ও ভবনের কাঠামোগত সব ধরনের ত্রুটি সংশোধন কর্মপরিকল্পনা (ক্যাপ) অনুযায়ী শেষ করেছে।

সর্বশেষ খবর