রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইতিহাস বিকৃতিকারীদের কি লজ্জা হয় না : প্রধানমন্ত্রী

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল নাগরিক সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইতিহাস বিকৃতিকারীদের কি লজ্জা হয় না : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার পর অবৈধভাবে যারা ক্ষমতা দখলের পালা শুরু করেছিল, যারা এই মাটিতে জন্মগ্রহণ করেনি, এই মাটি ও  দেশের প্রতি কোনোরকম টানই যাদের ছিল না, তারাই জাতির পিতার নাম মুছতে চেষ্টা করেছিল। জাতির জনকের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। এই ভাষণ বাজাতে বাধা দিয়েছিল, আজকে যখন ইউনেস্কো এই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিলের স্বীকৃতি দিয়েছে, তাদের কি এখন লজ্জা হয় না? জানি না এদের লজ্জাশরম আছে কিনা?

গতকাল বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ প্রশ্ন রেখে বলেন, এরা তো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রেতাত্মা। স্বাধীন বাংলাদেশে থাকলেও পাকিস্তানের খোশামোদি, তোষামোদী ও চাটুকারিতার দল। কিন্তু ইতিহাসও প্রতিশোধ নেয়। ইতিহাস তার সত্য স্থান করে নেয়। আজকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের এই স্বীকৃতি পুরো বাঙালি জাতি, সব শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সব শক্তিকে সম্মানিত করেছে। ইউনেস্কোর ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে নাগরিক কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে। বিশাল এই সমাবেশে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করেছিল, তারা যেন কখনই আর দেশের ক্ষমতায় না ফিরতে পারে, সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভাষণ প্রচারে যত বাধা এসেছে তত তা জাগ্রত হয়েছে। এ ভাষণ বাজাতে গিয়ে অনেক বঙ্গবন্ধুপ্রেমী জীবন দিয়েছেন। ইতিহাসে অন্য কোনো ভাষণ এত ঘণ্টা, এত বছর ধরে বেজেছে কিনা আমার জানা নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিহাস ইতিহাসই। তাকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করলেও ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। আজকে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। ইতিহাসও প্রতিশোধ নেয়। ইতিহাস সত্যকে তুলে ধরে। যতই তাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হোক। ইতিহাস তার সত্য স্থান করে নেবে। এতক্ষণ আকাশ মেঘে ছেয়েছিল। আজকে আমাদের সূর্য নতুন করে দেখা দিয়েছে। এই নতুন সূর্যই এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে।

প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ৩টার দিকে সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেন। ৪টা ২০-এ বক্তব্য শুরু করেন তিনি। শেষ করেন ৪টা ৫০ মিনিটে। প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতেই স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনে বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। স্মরণ করেন ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু, তার পরিবারের সদস্য এবং জেলহত্যার শিকার চার জাতীয় নেতাকে।

 

 

সর্বজনশ্রদ্ধেয় শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও নজরুল গবেষক ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ ও জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী ও বাংলাদেশে ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টর বিট্রিস কালদুল। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেওয়া ধন্যবাদ স্মারক পাঠ করেন এবং সংস্থাটির বাংলাদেশ প্রতিনিধির হাতে তুলে দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বেলা পৌনে ৩টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় সমাবেশের মূল অনুষ্ঠান। ধর্মগ্রন্থ পাঠের পর শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা পরিবেশন করেন সমবেত দেশাত্মবোধক গান। সুবিশাল ও দৃষ্টিনন্দন এই নাগরিক সমাজের সমাবেশে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকেও চলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর বজ নির্ঘোষ ভাষণ নিয়ে নিজের লেখা সাড়াজাগানিয়া কবিতা ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ আবৃত্তি করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ‘আমার পরিচয়’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। প্রায় ৯০ ফুট বিশাল নৌকাসদৃশ্য মঞ্চে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে সংগীত পরিবেশন করেন দেশে স্বনামধন্য শিল্পী শাহীন সামাদ, মমতাজ বেগম এমপি, সাজেদ আকবর ও অমিনা মুক্তি গমেজ। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দেশের বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী আবদুল আলিম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী।

নাগরিক সমাবেশ ঘিরে রাজধানীজুড়ে বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জা করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান প্রধান সড়কে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ওপর রংবেরঙের ডিসপ্লে ছাড়াও ব্যানার, ফেস্টুন এবং নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে শত শত পোস্টার লাগানো হয়। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও সংলগ্ন এলাকাকেও মনোরম সাজে সাজিয়ে তোলা হয়। সমাবেশ কার্যক্রম সরাসরি প্রচারে সমাবেশস্থলে লাগানো হয়েছিল কয়েকটি বড় বড় এলইডি মনিটর।

দুপুর ১২টার পর থেকেই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নামে মিছিলের স্রোত। ২টার মধ্যেই বিশাল প্যান্ডেল পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এর পরও মিছিলের স্রোত আসতে থাকায় প্যান্ডেলে স্থান না হওয়ায় পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই লোকে-লোকারণ্য হয়ে পড়ে। দুপুর ২টা থেকেই মানুষের স্রোতের কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারদিকের রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। সমাবেশে আসা লাখো মানুষের চোখেমুখে ছিল একাত্তরের মতোই বিজয়ের আনন্দ।

শুধু আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলই নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মিছিল সবার দৃষ্টি কাড়ে। সবার হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। এমনকি সমাবেশের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পরে এসেছিলেন জাতীয় পতাকার রং লাল-সবুজের শাড়ি। নাগরিক সমাবেশে মানুষের ঢল নামায় রাজধানীর শাহবাগ, মালিবাগ, গুলিস্তান, মতিঝিল, ফার্মগেট, আসাদগেট, মহাখালীসহ অধিকাংশ স্থানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার বক্তব্যে ইউনেস্কো ও যে দেশগুলো ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে তাদের ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, বিশ্বে স্বীকৃতি পাওয়া ভাষণগুলো ছিল লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাষণ লিখিত ছিল না। এই ভাষণের জন্য কোনো ‘নোটস’ও বঙ্গবন্ধুর হাতে ছিল না। ৭ মার্চে ভাষণ দেওয়ার আগে সহধর্মিণী ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুকে আলাদা ডেকে নিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মা বাবাকে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন অনেকে অনেক কিছু বলছে। কিন্তু তুমি তা-ই বলবে যা তুমি ভালো মনে কর।’ প্রধানমন্ত্রী বাবাকে দেওয়া মায়ের এই পরামর্শকে শ্রেষ্ঠ পরামর্শ বলে উল্লেখ করেন।

দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে যে একটি দেশের উন্নয়ন হয়, তা আমরা প্রমাণ করেছি। একুশ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এর আগে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকভাবে পরাজিত করতে চেয়েছিল। আর আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। জাতির পিতা চেয়েছিলেন রাজনৈতিক মুক্তি, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সংস্কৃতির অধিকার ফিরিয়ে দিতে। আজকে আমরা সারা বিশ্বে গর্বিত জাতি। কিন্তু গর্বিত উন্নত শির যেন পরাজিত না হয়, পুরো বাঙালি জাতিকে সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ গড়ে তুলব। উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। সেটাই আজকে আমাদের প্রতিজ্ঞা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। এতক্ষণ মেঘে ছেয়ে ছিল। আজকে আমাদের সূর্য নতুন করে দেখা দিয়েছে। এই সূর্য এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে।

সমাবেশে ভিড়ের কারণে অনেক নেতা-কর্মীই মূল উদ্যানের ভিতরে প্রবেশ করার সুযোগ পাননি, তারা আশপাশের রাস্তাগুলোয় মিছিল নিয়ে শোডাউন করেন। সোহরাওয়ার্দী ছাপিয়ে শাহবাগ, টিএসসি চত্বর, দোয়েল চত্বরেও মানুষের ভিড় দেখা গেছে। টিএসসি এলাকার জনস্রোত দেখে মনে হয়েছে এটি যেন আলাদা কোনো সমাবেশ। সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জায়গা না থাকায় অনেকে রাজু ভাস্কর্যের নিচে অবস্থান নেন। অনেকেই আবার মিছিল নিয়ে শাহবাগ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করেন।

বিশিষ্টজনেরা যা বললেন : সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ থেকে আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা এসেছে। আমি ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানাই, তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল মহাকাব্য। ১৮ মিনিটের ভাষণে কোনো তৎসম শব্দ ছিল না।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের সময়ের শত্রুরা আজ নেই। কিন্তু এখন নতুন শত্রু আছে, তাদের মোকাবিলা করতে হবে। কলমসৈনিককে কলম দিয়ে, শিল্পীকে গান দিয়ে শত্রুদের মোকাবিলা করতে হবে। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই ৫০ থেকে ৬০ জন ছাত্র আমার সামনে থাকে। সেখানে স্লোগান দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও দিতে পারি না। আজকে আমি সুযোগ পেয়েছি, তাই আমি স্লোগান দিচ্ছি। আপনারাও আমার সঙ্গে স্লোগান দিন। এ সময় তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানটি দিলে উপস্থিত সবাই তার সঙ্গে গলা মেলান।

জাফর ইকবাল বলেন, আজকে আমার জীবনটা ভরে গেল, এ ঋণ শোধ করতে পারব না। পৃথিবীতে খুব কম দেশ আছে যেখানে দেশ ও একজন নেতা সমার্থক। আমরা সেই সৌভাগ্যবান জাতি, যেখানে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য সেই দিন আমার খুব কাছ থেকে শোনার সৌভাগ্য হয়েছিল। এ ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ভাষণ। ৭ মার্চের ভাষণে বাঙালির স্বাধীনতা ঘোষণা হয়েছিল।

শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, ২০১২ সাল থেকে ৭ মার্চের ভাষণ পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ১৮ মিনিটের এ ভাষণ পড়াতে ৬টি ক্লাস নিতে হয় আমাদের। এ ভাষণ বুকে ধারণ করলে কেউ আর বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেলার সাহস করবে না।

ধন্যবাদ প্রস্তাবে ওবায়দুল কাদের যা বলেন : বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ সম্ভবত পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র ভাষণ, যা একটি জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছে। তার এ কালজয়ী ভাষণ সেদিনের সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে বিপুলভাবে আলোড়িত ও আন্দোলিত করেছিল এবং দেশের সর্বস্তরের মানুষ মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কৃষ্ণরাতে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর নিরস্ত্র জনতার ওপর স্মরণাতীতকালের নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে যার যা কিছু হাতে ছিল তা নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং পরিশেষে অগণিত শহীদের জীবন ও মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমাদের দেশ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করে।

আমরা, বাংলাদেশের নাগরিকবৃন্দ ইউনেস্কোর শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সব কর্মকাণ্ডের প্রতি জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে আমাদের আন্তরিক সমর্থন জ্ঞাপন করছি, যা পৃথিবীর সব দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যের সেতুবন্ধ তৈরি করবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

সর্বশেষ খবর