সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফের ভোট ঢাকা উত্তর সিটিতে

৯০ দিনের মধ্যেই আয়োজনে প্রস্তুত ইসি, এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা ধানের শীষে

গোলাম রাব্বানী

ফের ভোট ঢাকা উত্তর সিটিতে

ফের ভোট হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে। আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে উপনির্বাচনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৯০ দিনের মধ্যেই ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচন আয়োজন করতে প্রস্তুত রয়েছে তারা। মেয়র পদ শূন্য ঘোষণার প্রজ্ঞাপন হাতে পেলেই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করবে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি।

আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে ভোটের তফসিল দিয়ে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট করার ইচ্ছা রয়েছে ইসির। তবে ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল এই সিটিতে নির্দলীয় ভোট হলেও এবার দলীয় প্রতীকে উপনির্বাচন হবে। এ ক্ষেত্রে ভোটের মাঠে নৌকা-ধানের শীষের লড়াই হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন-বিশ্লেষকরা।

ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, পদটি শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারির পর ভোটের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ৩০ নভেম্বর থেকে ৯০ দিন, অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেয়র পদে উপনির্বাচন শেষ করতে হবে। কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে অন্তত ৪৫ দিন হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করতে পারে।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে মেয়র পদে (টেবিলঘড়ি প্রতীকে) আনিসুল হক পেয়েছিলেন ৪ লাখ ৬০ হাজার ১১৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত (আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের) প্রার্থী তাবিথ আউয়াল পেয়েছিলেন বাস প্রতীকে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৮০ ভোট। মেয়র পদে মোট ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আর ওই সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এক হাজার ৯৩টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলেন ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪ জন। তবে এবার এই সিটিতে নতুন ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে। সেই হিসাবে ভোটারসংখ্যাও বাড়বে। ঢাকা উত্তর সিটির নির্বাচনের বিষয়ে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘মেয়র পদ শূন্য ঘোষণার প্রজ্ঞাপন হাতে পেলেই নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। শূন্য ঘোষণার দিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে আমাদের।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন অনুযায়ী, সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা থেকে পাঁচ বছর মেয়াদ থাকে শপথ নেওয়া জনপ্রতিনিধিদের। আইন অনুযায়ী উপনির্বাচনে মেয়র পদে নতুন যিনি আসবেন, তিনি মেয়াদের বাকি অংশটুকু দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন ইসির সহকারী সচিব রাজীব আহসান।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। নির্দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন আনিসুল হক। প্রায় দুই বছর ধরে ওই দায়িত্ব পালনের মধ্যেই চলতি বছর জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিসে আক্রান্ত আনিসুল। চিকিত্সাধীন অবস্থায় ৩০ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, ওই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থনে চমক ছিল। এবারও তাদের চমক থাকবে। আর বিএনপিও আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে এই সিটিতে চমক দেখাতে চাইবে। প্রথম ওই নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী ভোট বর্জনের পর পুনঃ ভোটের জন্য ইসিতে চিঠি দিয়েছিলেন। তাই এ নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। ভোটের মাঠে নৌকা-ধানের শীষের লড়াইয়ের কথাই বলছেন বিশ্লেষকরা।

সর্বশেষ খবর