বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভোটের আলোচনায় রাজনীতি

রংপুরের পর ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচন, ধারাবাহিকতায় গাজীপুর খুলনা বরিশাল সিলেট রাজশাহী

গোলাম রাব্বানী

ভোটের আলোচনায় রাজনীতি

রাজনীতির মাঠে চলছে শুধুই ভোটের আলোচনা। ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের ভোটের পর ঢাকার উত্তর সিটিতে মেয়র পদে উপনির্বাচন। এরপর আগামী অক্টোবরের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটিতেও ভোট হবে। এ ছাড়া বছরজুড়েই থাকবে স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচনও। তাই সর্বত্রই ভোটের আলোচনা। রাজনৈতিক দলগুলোও নেতা-কর্মীদের রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। সংসদ নির্বাচনের আগে ছয় সিটি নির্বাচন নিয়ে হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ অন্য দলগুলো। বিশ্লেষকরা বলছেন—২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটির পরে আগামী ২০১৮ সাল পুরোটাই ভোট উৎসবে থাকবে বাংলাদেশ। সরগরম থাকবে রাজনীতির মাঠ। নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, সংসদ নির্বাচনের আগে সাত সিটি নির্বাচনকে মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক দলগুলো। এ নির্বাচন নৌকা-ধানের শীষের জন্য অগ্নিপরীক্ষা। জনগণের কাছে কোন প্রতীকের কেমন কদর তা-ও প্রমাণ হবে এসব নির্বাচনে। তাই সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক হিসাব-নিকাশ করছে প্রধান দুই দল। সেই সঙ্গে দুই দলের শরিকদের সঙ্গে চলছে আলাপ-আলোচনা। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে বলে সবার নজর সিটির ভোটের দিকে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন—আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচন। সেইসঙ্গে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটির নতুন ৩৬ ওয়ার্ডে ভোট হওয়ার কথা। এর পর আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে গাজীপুর, জুনের মধ্যে রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেটেও ভোটের প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। এর পরই হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ ছাড়া বছরজুড়েই থাকবে স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচনও। আর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে সংসদ নির্বাচন করার জন্য অক্টোবরে চূড়ান্ত করা হবে ভোটের দিনক্ষণ। নভেম্বরের মাঝামাঝিতে হতে পারে তফসিল। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনা আছে তাদের। নির্বাচন কমিশন বলছে, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনকে সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত রয়েছে তারা। আগামী বছর ৩০ অক্টোবর  থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে সাত সিটি নির্বাচন করে রাজনৈতিক দল ও জনগণের আস্থা অর্জন করতে চায় তারা। ইসির কর্মকর্তারা জানান, অক্টোবরের মধ্যে স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন শেষ করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, সব দলকে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে মাঠ প্রশাসনের পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসির কাছে। সিইসি বলেন, ইসির স্বল্পসংখ্যক নিজস্ব কর্মকর্তা দিয়ে ভোট আয়োজন সম্ভব না হওয়ায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের  লোকবলকে মাঠে থাকতে হয়। সুষ্ঠু ভোটের জন্য বিদ্যমান আইনের প্রয়োগই যথেষ্ট।

সিটি নির্বাচনের দিনক্ষণ : শূন্য হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনের জন্য আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে তফসিল দিয়ে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট করার ইচ্ছা রয়েছে ইসির। গাজীপুর সিটিতে আগামী বছরের ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে, সিলেট সিটিতে ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে, খুলনা সিটিতে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এবং রাজশাহী সিটিতে ৫ অক্টোবর এবং বরিশাল সিটিতে ২৩ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।

ঢাকা উত্তরে নির্বাচনী জটিলতা নিরসনের পথ খুঁজছে ইসি : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) নতুন ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ায় এর সীমানা বেড়েছে। তাই  মেয়র পদে উপনির্বাচনের পাশাপাশি নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোয় নির্বাচন দিতে হচ্ছে। এসব ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মেয়াদ কত হবে, তা নিয়ে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। তাই ইসি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে জটিলতা নিরসনের  চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে আইন-বিধি সংশোধন করার পক্ষেও মত রয়েছে কমিশনের। এ বিষয়ে সচিবালয়কে সমস্যা চিহ্নিত করে, সমাধানের পথ খুঁজতে নির্দেশনাও দিয়েছে কমিশন।  নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন— কোনো সিটিতে নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হলে (ওই ওয়ার্ডের) নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মেয়াদ বর্তমান (বিদ্যমান) করপোরেশনের মতই হবে। সিটি আইনে এমন একটি বিষয় যুক্ত করে সংশোধনী আনলেই কোনো জটিলতা থাকবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটির বর্ধিত অংশ সংক্রান্ত সমস্যা নিরসনের জন্য ইসি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আলোচনা করবে।

 যদি এজন্য আইন-বিধিতে সংশোধনের প্রয়োজন হয়, তা সমাধান করে নির্বাচনের জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর