বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিএনপি বিচার বিভাগকে পকেটে নিয়েছিল

আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘বিএনপি আমলে বিচার বিভাগকে পকেটে নেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে বের করে ধীরে ধীরে বিচার বিভাগকে আজকে একটা মর্যাদার আসনে বসাচ্ছি। সেজন্য বিএনপি নেতাদের এত গাত্রদাহ।’ বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির মাধ্যমে বিচার বিভাগকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে— বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে আইনমন্ত্রী গতকাল এ কথা বলেন। রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) ও পাবলিক প্রসিকিউটরদের (পিপি) ১৯তম বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি। আইনমন্ত্রী বলেন, শৃঙ্খলাবিধির ২৯(২) বিধিতে বলা আছে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যদি সুপ্রিম কোর্টের কোনো মতপার্থক্য দেখা দেয়, আলোচনার পরও যদি তা নিরসন না হয়, তাহলে সুপ্রিম কোর্টের মতামত প্রাধান্য পাবে। এখানেই তো পরিষ্কার, এই বিচার বিভাগের স্বাধীনতার আসল যে পয়েন্ট, তা হচ্ছে এটা যদি সুপ্রিম কোর্টের কন্ট্রোলে থাকে তাহলে বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকবে। এটা কিন্তু নির্বাহী বিভাগের কন্ট্রোলে নয়। এটা নির্বাহী বিভাগের কন্ট্রোলে নেওয়ার চেষ্টাও করা হয়নি। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের প্রথম ব্যক্তি। এটা তার কাছে, তার ওপর ন্যস্ত এবং সংবিধান দ্বারা ন্যস্ত। আনিসুল হক বলেন, যাদের জন্য এই শৃঙ্খলাবিধি করা হয়েছে, তাদেরও তো একটা মতামত আছে এ ব্যাপারে, তাদের মতামত যখন গ্রহণ করা হয়েছে তারা মনে করেছেন, তাদের মর্যাদা বজায় থাকে যদি তা রাষ্ট্রপতির হাতে থাকে। সব বিবেচনায়, সংবিধান যা বলে দিয়েছে, সেটাকে প্রাধান্য দিয়ে এই শৃঙ্খলাবিধি করা হয়েছে। ষোড়শ সংশোধনী মামলার আপিল খারিজ করেছিল সাত সদস্যের বেঞ্চ কিন্তু বর্তমানে আপিলে আছেন পাঁচ সদস্য; এ ক্ষেত্রে তারা রিভিউ আবেদন শুনানি করতে পারবেন কিনা— জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট রুলস পড়ে যে ধারণা ও অভিজ্ঞতা হয়েছে, সে আলোকে বলতে পারি নতুন বিচারপতির জন্য রিভিউ পিটিশন শুনানি বন্ধ থাকবে না। পাঁচজন বিচারপতিই রিভিউ শুনানি করতে পারবেন।’ প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি কবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন, সে বিষয়ে আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য নেই। এটা রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। আমি আশা করব শিগগিরই নিয়োগ দেওয়া হবে। এর চেয়ে বেশি বলতে পারব না।’ এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগে ৩০ লাখ মামলা আছে। এটি এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। আগে কোনো সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। এর থেকে উত্তরণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিচারক নিয়োগ ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক। প্রশিক্ষণ কোর্সে ২৭ জন জিপি ও পিপি অংশগ্রহণ করেন।

সর্বশেষ খবর