বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
ছাত্রলীগে হলোটা কী

চবি রাবি ও এমসি কলেজে হামলা

প্রতিদিন ডেস্ক

সিলেটের এমসি কলেজ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গতকাল প্রতিপক্ষ সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের মিছিলে ধাওয়া করেছেন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদকদের পাঠানো খবর—

সিলেট : সিলেটের এমসি কলেজে ছাত্রদলের পর এবার সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের মিছিলে ধাওয়া দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলায় বাম সংগঠনের নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে কলেজে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মিছিল বের করলে এ ঘটনা ঘটে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রফ্রন্টের নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেইন, সৌরভ দাস, শামীম আহমদ, রাসেল এবং মুরাদের নেতৃত্বে ছাত্রফ্রন্ট নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেওয়া হয়। ধাওয়া খেয়ে ছাত্রফ্রন্ট নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, ছাত্রফ্রন্টের নেতা-কর্মীরা মিছিল থেকে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। তাই তাদের ধাওয়া করা হয়েছে। শাহপরাণ থানার ওসি আখতার হোসেন বলেন, ‘একটি বাম সংগঠন ক্যাম্পাসে মিছিল দিতে চাইলে ছাত্রলীগের বাধার সম্মুখীন হয় বলে খবর পেয়েছি। মারামারি কিংবা আহত হওয়ার খবর শুনিনি।’ চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট প্রগতিশীল ছাত্রজোটের মিছিলে ছাত্রলীগের ধাওয়া ও হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল দুপুরে চবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় চবি ছাত্র ইউনিয়নের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিপীড়ন বিরোধী’ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল চাকসু ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতা-কর্মীরা। তারা লাইব্রেরি ভবনের সামনে পৌঁছানোর পর ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিলের ওপর চড়াও হন। চবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ধীষণ প্রদীপ চাকমা বলেন, ‘লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাদের মিছিলে হামলা করে। এতে আমাদের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।’ চবির সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আমরা প্রকৃত দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করব।’

রাজশাহী : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রগতিশীল ছাত্রজোট নেতাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুর একটার দিকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও গালিগালাজের অভিযোগ করেছেন ছাত্রজোটের নেতা-কর্মীরা। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, দখলদারিত্ব, হল বাণিজ্য, নির্যাতনের মতো জঘন্যতম সব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যদি তাই না হবে তাহলে সমাবেশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় নেতা-কর্মীদের ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে পারে না। তাদের মিছিলে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা বাম দলের নেতা-কর্মীদের ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। আমরা এর বিচারের দাবি জানাচ্ছি। তারা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছিলাম। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মিছিল নিয়ে যায়। এ সময় রাস্তা ছেড়ে দাঁড়ালেও তারা আমাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও গালিগালাজ করেন। বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর রাবি শাখার সভাপতি ফিদেল মনিরের সঞ্চালনায় ছাত্রজোটের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের রাবি শাখার সভাপতি লিটন দাস, ছাত্র ইউনিয়নের রাবি সংসদের সভাপতি এএম শাকিল হোসেন, ছাত্রফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মোড়ল, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি আবদুল মজিদ অন্তর প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, নবীনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত মিছিল করেছি। যদি তাদের কর্মসূচি ভণ্ডুল করতে চাইতাম তাহলে তাদের তাড়িয়ে দিতাম। আমরা মিছিল নিয়ে গেলে তারা রাস্তায় সমাবেশ করছিল, সেখানে শরীরের সঙ্গে শরীরের ধাক্কা লাগতেই পারে।

সর্বশেষ খবর