বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আগামী মাসে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল আজ ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। গতকাল সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৮-২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার ইসি এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। তবে আজ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বসবেন সিইসি। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই বৈঠক হওয়ার কথা।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শুধু সংসদ সদস্যরাই ভোট দেবেন; ভোটগ্রহণ হবে সংসদে; তবে নির্বাচন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন সিইসি। নির্বাচন কমিশন আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করতে যাচ্ছে বলে এর আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এই আলোচনার মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করতে যান সিইসি। সিইসি বলেন, নির্বাচন আয়োজনে সংসদ সচিবালয় এবং সংসদের কী ধরনের সহযোগিতা ইসি পেতে পারে, তা আইনে নির্ধারিত আছে। তারপরও সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য এসেছিলেন তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের খসড়া তফসিল নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আলোচনা করেছেন। তারা আজ কমিশন বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে। শিরীন শারমিন জানান, ইসির চাহিদা অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংসদ সরবরাহ করেছে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. আবদুল হামিদ। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৬ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই হিসাবে আবদুল হামিদ এই পদে সপ্তদশ ব্যক্তি। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারবেন। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মেয়াদ অবসানের কারণে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৩ এপ্রিল। ফলে সংবিধান অনুযায়ী, ভোট হতে হবে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।

১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছে— নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি। সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় একবারই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দেন সংসদ সদস্যরা। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন। আইন অনুযায়ী, একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সংসদ সদস্যরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর