বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
আদালতে খালেদার আইনজীবী

গোপাল ভাঁড়ের গল্পের মতো ফাঁসিয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলাটি ‘উদ্ভট, বায়বীয় ও কাল্পনিক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আহসানউল্লাহ। তিনি বলেন, মামলার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। আসামিরা কোনো অপরাধ করেননি। গোপাল ভাঁড়ের গল্পের মতো নিরীহ মোটা লোক ধরে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মামলায় কিছুই নেই, এটি অসাড়, যুক্তিহীন, অবাস্তব বলেও দাবি করেন তিনি। গতকাল ঢাকার পঞ্চম বিশেষ আদালতে মামলার আসামি ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক কামালের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী মো. আহসানউল্লাহ। দুই আসামির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় আজ অসমাপ্ত বক্তব্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার পঞ্চম বিশেষ আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার চলছে। গতকাল বেলা সোয়া ১১টার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে এর ৪০ মিনিট পর মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত হন। এর আগের দিন কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল (বুধবার) এ আদালতের কার্যক্রম মুলতবি প্রার্থনা করেন খালেদা জিয়া। ওই আবেদনে সাড়া না দিয়ে খালেদা জিয়াকে বুধবার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। মামলা মুলতবি না করায় খালেদা জিয়া গতকালও আদালতে যথারীতি হাজির হন এবং বেলা ৩টা পর্যন্ত অপর দুই আসামির পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনেন। গতকাল প্রথমে ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে যুক্তিতর্কে অংশ নিয়ে তার আইনজীবী মো. আহসানউল্লাহ বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ‘ভার’ দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে এ মামলার জড়ানো হয়েছে।

 এ মামলায় কিছুই নেই। এটি একটি ধারণাপ্রসূত মামলা। মাছ ধরার জন্য বড়শির একটু ওপরে সিসার ভার দিয়ে পানিতে ডোবানো হয়। তেমনি একটি ‘সাজানো’ মামলার ‘ভার’ দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়া ও ড. কামাল সিদ্দিকীকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, আর্থিকভাবে এ মামলায় লাভবান বা ক্ষতির সঙ্গে জড়িত নন আসামিরা। আহসানউল্লাহ বলেন, দিলু ব্যাপারীর নাতি শরফুদ্দিন আহমেদ একজন ব্যবসায়ী। তিনি জমি বিক্রির জন্য বায়না করলেও পরবর্তী সময়ে সুদে-আসলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। তার কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়নি। এ পর্যায়ে আসামি শরফুদ্দিন আহমেদের খালাস দাবি করেন এই আইনজীবী। এরপর কাজী সলিমুল হক কামালের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন তিনি। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের একপর্যায়ে সেনা-নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ টেনে অ্যাডভোকেট আহসানউল্লাহ বলেন, ওই সময় যারা দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, তারা নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। সে সময় মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য লে. জেনারেল হাসান মাসুদ চৌধুরী এ মামলাটি করে দেন। তিনি বলেন, ভুল সময়ে ভুল জায়গায় থাকার কারণে ফেঁসে গেছেন ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন ও কাজী সালিমুল হক কামাল।

সর্বশেষ খবর