মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাজার জিয়ারত খালেদা জিয়ার

সিলেটে যাওয়ার পথে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ♦ নারায়ণগঞ্জে দলের নেতা-কর্মী আটক ♦ নরসিংদীতে গাড়িবহরে ইটপাটকেল

মাহমুদ আজহার ও শাহ দিদার আলম নবেল, সিলেট থেকে

মাজার জিয়ারত খালেদা জিয়ার

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গতকাল সিলেটের শাহজালাল (রহ.) এর মাজারে মোনাজাত করেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

পথে পথে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল সকাল সোয়া ৯টায় ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দিয়ে গভীর রাতে রাজধানীতে ফিরেন তিনি।

বেগম খালেদা জিয়ার সিলেট যাত্রাপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান থাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাস্তায় দাঁড়াতে পারেনি। কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদেরও অবস্থান ছিল। বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানাতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জে আটক হয়েছেন দলের ১০ নেতা-কর্মী। আটক নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান। নরসিংদীর ভেলানগরে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাধার মুখে পড়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর। এ সময় তাঁর গাড়ির সামনে জুতা প্রদর্শন করেন তারা। সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হয় ও নৌকার পক্ষে স্লোগান হয়। এ ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নীরব ছিলেন। ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত পৌঁছাতে এরকম বেশ কয়েকটি স্থানে বাধার মুখে পড়ে খালেদার গাড়িবহর। এ সময় বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ধশত নেতা-কর্মীকে আটক করা হয় বলে দাবি বিএনপির। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে পুলিশের কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

বেগম খালেদা জিয়া বিকাল ৫টার দিকে সিলেট পৌঁছান। স্থানীয় সার্কিট হাউসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে মাগরিবের নামাজের আগে হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে যান তিনি। এরপর শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে খাদিমনগরে হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজারে জিয়ারত করেন তিনি। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন হাজার হাজার মানুষের স্রোত ডিঙিয়ে হজরত শাহজালালের মাজারে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কক্ষে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। এরপর তিনি ফাতেহা পাঠ এবং মিলাদে অংশ নেন। মুফতি নেহাল উদ্দিন মিলাদ পড়ান। মাজারের খাদেম মোনাজাত পড়ান। এরপর খাদিম নগরে হজরত শাহপরানের মাজারে যান। সেখানে তিনি ফাতেহা পাঠ ও মাজার জিয়ারত করেন। খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকতউল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ নেতারা মাজার জিয়ারত করেন। সার্কিট হাউস থেকে মাজার পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে হাজার নারী-পুরুষ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তাদের নেত্রীকে করতালি দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বন্দর বাজার, জিন্দাবাজার, আম্বর খানা সড়কের দুই পাশের উঁচু দালানেও খালেদা জিয়াকে একনজর দেখতে মানুষ অবস্থান নেয়। এ সময় দলীয় নেতা-কর্মীরা ‘আমার নেত্রী আমার মা, বন্দী হতে দেব না’ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ধানের শীষের মালিক তুই আল্লাহ’, ‘খালেদা জিয়ার আগমন, লাল গোলাপ শুভেচ্ছা’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।

সার্কিট হাউসে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মোত্তালিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবন, সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর সভাপতি নাসিম হোসেইন, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা কলিমউদ্দিন মিলন, দিলদার হোসেন সেলিম, জি কে গউস, এম নাসের রহমান, কাইয়ুম চৌধুরী প্রমুখ নেতারা বিএনপি চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা জানান। খালেদা জিয়ার সিলেট সফর ঘিরে সিলেটসহ আশপাশের জেলা, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, কিশোরগঞ্জের ভৈরব এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। তবে প্রায় প্রতিটি এলাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা। আবার খালেদা জিয়ার গাড়িবহরকে ঘিরে বিক্ষোভ করতেও দেখা গেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশের অবস্থান ছিল। অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় আশপাশের দোকানপাট, হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ দেখা গেছে। সকাল সোয়া ৮টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) এবং হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করতে যাচ্ছেন। তিনি কোনো নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে সেখানে যাচ্ছেন না। এক বছর আগে নির্বাচনী প্রচারণার কোনো সুযোগ নেই। এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। খালেদা জিয়ার গাড়িবহর নরসিংদী মহাসড়কের ভেলানগর এলাকায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ বিএনপি নেতারা তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। তবে গাড়িবহর যাওয়ার সময় সেখানে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা জুতা প্রদর্শন করে। বিএনপির নেতাদের গাড়িবহর বিক্ষোভকারীদের কবলে পড়ে। এ সময় যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল হাসান পিংকুর গাড়ি ভাঙচুর হয়। মাধবদী, বেলাব, শিবপুরে ও চৈতন্যবাজার এলাকায় মহাসড়কের পাশে জড়ো হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ লাঠিপেটা করে। এ সময় বেসরকারি টেলিভিশন এসএ টিভির একজন কামেরাপারসন আহত হন। নরসিংদীর শিবপুরে খালেদা জিয়া মিনিটখানেকের মতো গাড়ি থামান। কারাবন্দী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের নেতা-কর্মীরা সেখানে জড়ো হন। এ সময় তার পরিবার দেখা করতে এলে তার পিতাকে পুলিশ আটক করে বলে অভিযোগ করা হয়। ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি মো. বাহার মিয়াসহ ১০ জনকে আটকের দাবি করা হয়। পরে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে ভৈরব বাসস্ট্যান্ডে ব্যাপক নেতা-কর্মী বেগম জিয়াকে শুভেচ্ছা জানান। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে পুলিশ নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। সিলেট শহরেও ধরপাকড় চালায় পুলিশ। সার্কিট হাউস এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কিছু নেতা-কর্মী আটক করা হয়। খালেদা জিয়ার গাড়িবহর পুলিশ পাহারার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাদা পোশাকে বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস ও পাজারো জিপ ছিল। বিভিন্ন স্থানে প্রতিবন্ধকতা ও গ্রেফতার সম্পর্কে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— নারায়ণগঞ্জ : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে নারায়ণগঞ্জ মহাসড়কে দাঁড়াতেই পারেননি বিএনপি নেতা-কর্মীরা। বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের কারণে কোথাও বিএনপি নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেননি। তবে কয়েক স্থানে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তখন পুলিশ তাদের ধাওয়া ও লাঠিচার্জ করে তাড়িয়ে দেয়। পুলিশ বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, মহানগর বিএনপির সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খানসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। উল্লেখ্য, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে সাইনবোর্ড থেকে রূপগঞ্জের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অতিক্রম করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহর। সাইনবোর্ডে সকালে মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি এ টি এম কামালের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা জড় হওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে পুলিশ তাদের হটিয়ে দেয়। রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : রূপগঞ্জে পুলিশি বাধায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দাঁড়িয়ে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে পারেননি। তারা ভুলতায় অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। ফলে সকাল থেকে মহাসড়কে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কোনো নেতা-কর্মী অবস্থান নিতে পারেননি। নরসিংদী : সিলেট সফরে যাওয়ার সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে জুতা নিক্ষেপ করেছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর ভেলানগরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তারা নৌকা নৌকা বলে স্লোগান দেন। তবে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ব্যারিকেড এড়িয়ে সড়কে খালেদা জিয়ার নাম ধরে পাল্টা স্লোগান দেন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকনসহ উপস্থিত নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে সকালের দিকে বিএনপি নেতা-কর্মী ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মহাসড়কের ভেলানগরে অবস্থান নেন। অন্যদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারমুখী অবস্থা তৈরি হলে পুলিশ দুই দলের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেয়। জানা গেছে, বিএনপির মিছিল থেকে ১০ নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করে। তাদের মধ্য থেকে দুপুর ১টার দিকে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চৈতন্য বাজার এলাকায় সমর্থকদের সঙ্গে প্রায় ১০ মিনিট রাস্তায় দাঁড়িয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খালেদা জিয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট উজান ভাটি রবিবার গভীর রাতে পুলিশ বন্ধ করে দেওয়ায় এ রেস্টুরেন্টে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার যাত্রাবিরতি করা হয়নি। স্থানীয় সূত্র জানায়, এখানে জেলার সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের মতবিনিময় করার কথা ছিল। এদিকে পুলিশ আশুগঞ্জ থেকে বিএনপির চার নেতাকে গ্রেফতার করেছে। এ ছাড়া দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনির কামালের আদালত জেলা বিএনপি সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৬৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পুরনো মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। হবিগঞ্জ : সিলেটে যাওয়ার পথে হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির তরফ থেকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। তিনি দুপুর ১টার দিকে মাধবপুরে গাড়িবহর নিয়ে পৌঁছেন। সেখানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাকে শুভেচ্ছা জানান। দুপুর ২টার দিকে বেগম খালেদা জিয়া শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র আলহাজ জি কে গউছ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার শিপারের নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মীরা মহাসড়কের দুই পাশে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানিয়ে স্লোগান দেন। এ সময় খালেদা জিয়াও গাড়ি থেকে হাত নেড়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের অভিবাদন জানান। উল্লেখ্য, সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে নতুন ব্রিজ এলাকায় জড় হতে থাকেন। সকালে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় পথসভার আয়োজন করে স্থানীয় বিএনপি। এ ছাড়া বাহুবলের মিরপুর, বাহুবল, নবীগঞ্জের আউশকান্দি গোলচত্বরে নেতা-কর্মীরা বেগম খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানান। শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : শ্রীমঙ্গলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত হয়েছেন। তারা হলেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম নজরুল ও সহকারী পুলিশ সুপার মো. খন্দকার আশফাকুজ্জামানের হেদরক্ষী কনস্টেবল মুজাহিদুল ইসলাম। গতকাল দুপুরে বিএনপির মিছিল থেকে শহরের চৌমুহনা চত্বরে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা হলে পুলিশের সঙ্গে এ সংঘর্ষ বাধে। কিশোরগঞ্জ : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সিলেট সফরকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি বর্ষণ ও লাঠিচার্জ করে। পরে জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদকসহ আট নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় বেগম খালেদা জিয়া ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে। আটকরা হলেন জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, ভৈরব উপজেলা বিএনপি সভাপতি রফিকুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বাহার মিয়া, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তারিকুজ্জামান পার্নেল, বিএনপি কর্মী জুয়েল মিয়া, মাসুদ মিয়া, আকরাম হোসেন ও আতাউর রহমান। বিএনপি নেতারা জানান, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ঢাকা থেকে সিলেটে যাওয়ার পথে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ভৈরবের দুর্জয় মোড়ে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দিলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

রাঙামাটি : রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতিসহ ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন— রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহআলম, রাঙামাটি জেলা যুবদলের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম শাকিল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, জেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. শহীদ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক আবুল হোসেন বালি এবং জেলা ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক মো. কামাল উদ্দীন। গতকাল রাত ৯টার দিকে তাদের রাঙামাটি জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে আটক করা হয়।

গণগ্রেফতার : পুলিশ গতকাল নাশকতার আশঙ্কায় বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ছাত্রদল ও জামায়াতের ৪, বান্দরবানের লামায় বিএনপির ৩, ঝিনাইদহে ৭ ককটেলসহ বিএনপি ও জামায়াতের ২৪, হবিগঞ্জের বেগমগঞ্জ উপজেলা থেকে নোয়াখালী জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মো. আলাউদ্দিন (৫৮) ও ছাত্রদলের ২, ঢাকার নবাবগঞ্জ-দোহার থেকে বিএনপির ৪, ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে ছাত্রদলের ৩, বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সম্পাদক, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১২, কুড়িগ্রামের উলিপুর-ভূরুঙ্গামারী থেকে যুবদল-ছাত্রদলের ৫, শেরপুরে যুবদল-ছাত্রদলের ৪, নীলফামারীতে বিএনপি ও জামায়াতের ২৩, জামালপুরে বিএনপির ৩, কুমিল্লায় বিএনপি ও জামায়াতের ২৬ এবং চাঁদপুরে বিএনপি ও জামায়াতের ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে।

সর্বশেষ খবর