শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভাঙাভাঙির কথা বলে লাভ নেই

মওদুদ আহমদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্ব অবস্থায় দল ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। আমাদের নেত্রী ইনশা আল্লাহ বেরিয়ে আসবেন। বিএনপি যে একটা ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক দল এবং ২০ দল যে ঐক্যবদ্ধ জোট তা আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। ভাঙাভাঙির কথা বলে লাভ নেই। বিএনপিকে ১০ বছরে কেউ ভাঙতে পারেনি, এখনো পারবে না। এখন তো যুদ্ধের সময়, বিপদের সময় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভায় ব্যারিস্টার মওদুদ এ কথা বলেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ব্যাপারীর সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধুরী, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা শওকত আমীন, এনডিপির মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ বক্তব্য দেন। উচ্চ আদালতে আগামীকাল রবিবারই খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর হবে বলে আশাবাদী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘আগামী রবিবার তার (খালেদা জিয়া) জামিনের আবেদনের শুনানি হবে। তিনি জামিন পাওয়ার অধিকারী। আমাদের জুডিশিয়ারি নিয়মনীতি ও ন্যায়বিচারের যে কাঠামো আছে, তাতে আমার বিশ্বাস, ইনশা আল্লাহ রবিবারই বেগম জিয়ার জামিন মঞ্জুর হবে। আমি মনে করি, এক দিনের বিলম্ব আমাদের প্লাস পয়েন্ট, এক দিন বিলম্ব আওয়ামী লীগের মাইনাস পয়েন্ট।’ সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেন, ‘নানা রকমের কূটকৌশলে মামলার রায়ের সার্টিফায়েড কপি দিতে বিলম্ব করেছে। যাই হোক আমরা বৃহস্পতিবার আপিল ফাইল করেছি। আপিল গৃহীত হয়েছে। এখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শুনানি হবে। আমাদের নেত্রীর কারাগারে খুব কষ্ট হচ্ছে। একটা নির্জন কারাগারে তাকে রাখা হয়েছে, যা সংবিধান পরিপন্থী। সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে, একজন আসামির বিচার হবে পাবলিক ট্রায়ালে। এটা তার মৌলিক অধিকার। এটা কোনো ক্যামেরা ট্রায়াল হবে না। যে জায়গায় আমাদের নেত্রীর ট্রায়াল হয়েছে তা কখনই পাবলিক ট্রায়াল বলা যাবে না। একটা মারাত্মক রকমের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে এই বিচারকার্য পরিচালনা করা হয়েছে।’ খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে দলের কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমি বেগম জিয়ার দূরদর্শিতার প্রশংসা করি। তিনি কারাগারে যাওয়ার সময় আমাদের বলে গেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের আন্দোলন করতে হবে, কোনো ধরনের হঠকারিতা চলবে না।’ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ‘একতরফা’ নির্বাচনী প্রচারণার প্রতি ইঙ্গিত করে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘একদল নৌকায় ভোট চাচ্ছে। আরেক দলের নেত্রীকে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাহলে দেশে কী ধরনের গণতন্ত্র আছে বুঝতে পারছেন? আওয়ামী লীগ আমাদের জনসভা করতে দেয় না। অথচ নিজেরা জনসভা করছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আজ যদি ইসি সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ কমিশন হয়, তাহলে হয় তাদের বলতে হবে যে, আপনারা (আওয়ামী লীগ) এখন নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে পারবেন না। আর যদি তা না পারেন তাহলে তাদের উচিত বিএনপি ও বেগম জিয়া যাতে ধানের শীষে ভোট চাইতে এবং সভা-সমাবেশ করতে পারেন, সেই সুযোগ দেওয়া। দুটির মধ্যে একটি— হয় তাদেরটা বন্ধ করুন, নইলে আমাদের অনুমতি দিন।’ তিনি বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ আমাদের নেত্রী জেলখানা থেকে বেরোনোর পর আমরাও তাকে (খালেদা জিয়া) নিয়ে যাব। এবার কোনো আপত্তি আমরা শুনব না। আওয়ামী লীগ যদি সভা করে নৌকায় ভোট চাইতে পারে তাহলে বিএনপিও জনসভা করে ধানের শীষে ভোট চাইতে পারে। এই অধিকার তারা (সরকার) যদি আমাদের না দেয়, তাহলে আমরা বুঝব, আগামী নির্বাচনও একদলীয়ভাবে করার পরিকল্পনা করছে। সেটা এ দেশের মাটিতে আর কখনো সম্ভবপর হবে না। সে ধরনের একদলীয় নির্বাচন হবে না, করতে দেওয়া হবে না।’

সর্বশেষ খবর