সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

কমছে নির্বাচন পর্যবেক্ষক

গোলাম রাব্বানী

নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন তালিকা থেকে ভোট পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ১৩৮ সংস্থাকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন, দশম সংসদের আগে নিবন্ধন পায় ১২০ সংস্থা। আর এবারে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ভোট পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা আরও কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা। 

জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ১৯৯টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে নির্বাচন কমিশনে। কিন্তু  যাচাই-বাছাইয়ে নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য হিসেবে ৬০ সংস্থাকে নির্বাচন করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, এর আগে সর্বশেষ ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নিয়েছে ১২০টি সংস্থা, কিন্তু এদের অধিকাংশকে দেখা যায়নি নির্বাচনী মাঠে। এ অবস্থায় পর্যবেক্ষক সংস্থার তালিকাটি ছেঁটে অর্ধেক করার পরিকল্পনা চলছে। তাই এবারে নিবন্ধনের জন্য যারা আবেদন করেছেন, তাদের কাগজপত্র যাচাই করে মাত্র ৬০ সংস্থাকে যোগ্য বলে মনে হচ্ছে। এদিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির দ্বিতীয় কমিশন সভায় সংখ্যা কমানোর বিষয়েও মতামত আসে। ইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, এবার ১৯৯টি সংস্থার আবেদন পাওয়া গেছে। পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন নীতিমালা মেনে আবেদন যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। যারা শর্ত পূরণ করতে পারবে তারাই নিবন্ধন পাবে। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চালু হয়। ২০০৮ সালে ১৩৮টি সংস্থাকে নিবন্ধন দেয় ইসি। তখন নিবন্ধনের মেয়াদ ছিল এক বছর। পরে এ মেয়াদ পাঁচ বছর করে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এরপর ২০১১ সালে ১২০টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেয় ইসি। পাঁচ বছর নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। পরবর্তীতে কমিশন তা আরও এক বছর বাড়ানোর পর সেই মেয়াদ শেষ হয় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। এরপর ওই বছর আবারও ছয় মাস মেয়াদ বাড়ানো হয় তাদের। ইসি কর্মকর্তারা জানান, উল্লেখসংখ্যক সংস্থা ভোট পর্যবেক্ষণে যায় না। যেসব সংস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাদের মধ্যে কিছু সংস্থা নিয়মিত ইসিতে প্রতিবেদন জমা দেয় না। এ জন্য এবার সংস্থার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং বিগত নির্বাচনের সময় তাদের কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হবে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই যোগ্যদের পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দেওয়া হবে। নবম সংসদ নির্বাচনে দেশীয় ৭৫টি সংস্থা ভোট পর্যবেক্ষণে থাকলেও দশম সংসদে তা কমে ৩৫টিতে দাঁড়ায়। স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার সংখ্যা আরও কমে আসে। বিগত নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ১৬টি সংস্থা মাঠে ছিল। তাই এবারে ভুঁইফোড় সংস্থাকে নিবন্ধন না দেওয়ার চিন্তা করছে কমিশন। আর ভুঁইফোড় সংস্থাকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে ইসির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে অনেক নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা। তারা বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নিবন্ধিত হওয়ার পর যারা কাজটি করে না, তাদের রাখার কোনো মানে হয় না। যারা নিবন্ধিত তাদের কাজটিও ইসির তদারক করা উচিত। নামসর্বস্ব সংস্থা রেখে তালিকা লম্বা না করে নিষ্ক্রিয়দের বাদ দিতে হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নামে ‘ভুঁইফোড়’ সংগঠন মাঠে নেমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

সর্বশেষ খবর