শিরোনাম
বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
সংসদে রওশন এরশাদ

মন্ত্রিত্ব ফিরিয়ে নিয়ে জাপাকে বাঁচান

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টিকে রক্ষার জন্য সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাইলেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছিলাম, মন্ত্রিসভা থেকে আমাদের পার্টির সদস্যদের প্রত্যাহার করুন। কিন্তু সেটা হয়নি। এভাবে টানাটানি করে বিরোধী দল হওয়া যায় না। হয় আমাদের বিরোধী দল হতে দিন, নয় তো সবাইকে মন্ত্রী বানিয়ে দিন। আমি লজ্জায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারি না। জাতীয় পার্টির হয়ে কোথাও  আমি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না। তারা প্রথমেই জিজ্ঞেস করেন, আপনারা সরকারেও আছেন আবার বিরোধী দলেও আছেন। এ কেমন করে সম্ভব? তখন লজ্জা করে। বিশ্বের কোনো দেশে এমন নজির নেই। তাই আপনার কাছে অনুরোধ, আপনি আমাদের মন্ত্রিত্ব ফিরিয়ে নিয়ে জাপাকে বাঁচান। আমরা পরিপূর্ণ বিরোধী দল হিসেবে কাজ করতে চাই।’

জাতীয় সংসদের ১৯তম ও শীতকালীন অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে হঠাৎ করেই বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এ আকুতি জানান। এ সময় তার পাশের আসনে বসে ছিলেন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা। রওশন এরশাদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের (সরকারে থাকা জাতীয় পার্টির মন্ত্রীদের) মন্ত্রিত্ব নিয়ে নিন। সরকারে দু-একজন মন্ত্রী থাকায় আমরা না বিরোধী দল, না সরকারি দল। মন্ত্রিত্ব নিয়ে নিলে জাতীয় পার্টি বেঁচে যেত।’ তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনিও তো বলতে পারেন না জাতীয় পার্টি সরকারের শরিক, না বিরোধী দল।’ রওশন বলেন, ‘আমাদের নিয়ে বাইরে অনেক কথা হয়। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলাম, আমাদের মন্ত্রীদের  উইথ ড্র করেন। আমাদের বিরোধী দলের মতো বিরোধিতা করতে দিন। কিন্তু সেটা আর হয় নাই। সে জন্য বিরোধী দল হতে পারি নাই। এভাবে টানাটানি করে বিরোধী দল হওয়া যায় না।’ এ সময় রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, হয় বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে দিন, নয়তো  আমাদের ৪০ জনকে সরকারি দলে  নিয়ে নিন। বিরোধী দল দরকার নেই।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা তো বলেছিলাম।’ তখন রওশন এরশাদ বলেন,  ‘আপনি নির্দেশ দিলে মানবে না কে?’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাইক ছাড়া হাসতে হাসতে বিরোধীদলীয় নেতার উদ্দেশে কিছু একটা বলেন। জবাবে বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমরা বাদ দেব কেন? আপনিই তো দু-একজনকে মন্ত্রী বানিয়েছেন। কতবার বলেছি, এসব নিয়ে নিন। আপনি বাদ দিন।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, ‘আপনারাই তো নিলেন... আছেন...।’ এ সময় রওশন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি বলতে পারেন বিরোধী দল আছে? আমরাও বলতে পারি না। সে জন্য কোথাও ইন্টারভিউ দিই না। আরও এক বছর আছে। দেখেন সেটা।’ রওশন এরশাদ আবারও বলেন, ‘হ্যাঁ, আপনি বলেন, বিরোধী দলের দরকার নেই। আমাদের সবাইকে মন্ত্রী বানিয়ে দিন। আমরা বাইরে গেলে নানা কথা হয়। বলে, আপনারা কোথায় আছেন, সরকারে, না বিরোধী দলে? আমরা বলতে পারি না। কাজেই এটা যদি করতেন তাহলে জাতীয় পার্টি বেঁচে যেত। জাতীয় পার্টি আজ সন্মানের সঙ্গে থাকতে পারত। আমরা সন্মানের সঙ্গে নেই।’

সর্বশেষ খবর