বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাইপলাইনে ১০ বিলিয়ন ভারতীয় বিনিয়োগ

—হর্ষবর্ধন শ্রিংলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে ভারতের ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ পাইপলাইনে আছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করছে ভারত। পাঁচ বছর আগের চেয়ে এখন ভারতে পণ্য রপ্তানির বাধা অনেক কমেছে। সীমান্তে অবকাঠামোগত সমস্যা থাকায় রপ্তানি দেরি হচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হলে উভয় দেশে ট্রেনে কনটেইনারের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন শুরু হবে। গতকাল গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম বাংলাদেশ (আইবিএফবি) ও ইন্ডিয়ান ইমপোর্টার্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইআইসিসিআই) যৌথভাবে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, অনুন্নত অবকাঠামোগত সমস্যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের প্রধান বাধা। তিনি বলেন, বাণিজ্য বাড়াতে অশুল্কগত বাধা দূর করতে হবে। এজন্য আইন সংস্কার দরকার। ভারত সরকার বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে এখন ট্রেনে কনটেইনারের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন হয় না। কেবল যাত্রী পরিবহন হচ্ছে। হাইকমিশনার বলেন, পদ্মা সেতু হলে উভয় দেশে ট্রেনে পণ্য পরিবহন চালু হবে। এতে স্থলবন্দরের ওপর চাপ কমে আসবে। বর্তমানে যমুনা সেতুতে কনটেইনার পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আছে। এ কারণে ঢাকা থেকে কলকাতা ট্রেনে সরাসরি পণ্য পরিবহন হয় না। তিনি বলেন, বাণিজ্য বাড়াতে বর্তমানে ২১টি বাংলাদেশি খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে বিএসটিআইর মান সনদে স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত। আরও ৬টি পণ্য স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। তবে এজন্য উভয় দেশের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে বন্দর উন্নয়ন প্রয়োজন। তিনি বলেন, স্থলবন্দরের উন্নয়নে উভয় দেশের ঘাটতি রয়েছে। তা ছাড়া একই সময়ে দুই দেশ বন্দরের উন্ন্নয়ন করছে না। উভয় দেশের বন্দরের উন্ন্নয়ন হলে বাণিজ্য আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে চেম্বারসহ বাণিজ্য সংগঠনগুলো বড় ভূমিকা রাখতে পারে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, ভারতে পণ্য রপ্তানিতে একের পর এক অশুল্ক বাধা আসছে। এটা হচ্ছে প্রশাসনিক দিক থেকে। বিশেষ করে পণ্যের মান ও অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক দুটোর কারণে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সেমিনারে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বলেন, ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রায় ১৪ ধরনের অশুল্ক বাধা তৈরি করা হয়। দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে এসব বাধা দূর করতে হবে। ভারতে পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক সমস্যা না থাকলেও প্রধান বাধা হিসেবে দেখা দিয়েছে অনুন্নত অবকাঠামো ও বিদ্যমান অশুল্ক (নন ট্যারিফ) জটিলতা। রপ্তানির সম্ভাবনা সত্ত্বেও বেড়েই চলেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যবৈষম্য। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সেমিনারে আইবিএফবি সভাপতি ও রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান সভাপতিত্ব করেন। এতে ‘বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসা সম্ভাবনা’ শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এম এস সিদ্দিকী ও টি কে পাণ্ডে।

সর্বশেষ খবর