শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়েই নির্বাচনে যাব

মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়েই নির্বাচনে যাব

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচন করার সরকারের পরিকল্পনা ‘অলীক স্বপ্ন’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে যারা নির্বাচনের কথা ভাববেন, তারা অলীক স্বপ্নে বাস করছেন। তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। দেশনেত্রীকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে। মুক্ত নেত্রীকে নিয়েই আমরা নির্বাচনে যাব। নির্বাচনের প্রহসন চলবে না।’ গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ২০-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী জেলে কেন দেশের মানুষ জানে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের কথা এ মামলাটি সম্পূর্ণ একটা জাল নথির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ওই মামলায় তাকে বিচারের যে আইনের বিষয়গুলো রয়েছে, সেগুলোকে একেবারেই এড়িয়ে গিয়ে শুধু তাকে কারাগারে নিতে হবে সেজন্য সাজা দেওয়া হয়েছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য দেশনেত্রীকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা, তাদের মূল উদ্দেশ্য বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা, ২০-দলীয় জোটকে দূরে রাখা যাতে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও ক্ষমতায় যেতে পারে।’

প্রেস ক্লাবের কর্মসূচি শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১২তম কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ চলায় এক দোয়া মাহফিলে অংশ নেন মির্জা ফখরুল। এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ওলামা দল সভাপতি মাওলানা আবদুল মালেকসহ বিএনপি নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটের ভিতর থেকেই দোয়া মাহফিলে শরিক হন বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এদিকে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এম এ রকীব, জাগপা সভাপতি রেহানা প্রধান, ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ডিএল সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মণি, এনপিপি মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম এম আলম, আহসান হাবিব লিংকন, নওয়াব আলী আব্বাস খান, রুহুল আমিন খান প্রমুখ বক্তব্য দেন। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমার কথার শুরুতেই আমার মনে ব্যথা ও ক্ষোভ জানাতে চাই। বৃহস্পতিবার আমাদের দেশনেত্রীর মুক্তি দাবিতে যে অবস্থান কর্মসূচি ছিল, সেই কর্মসূচিতে এই অবৈধ-অনৈতিক সরকারের পেটোয়া বাহিনী সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করেছে। তারা একটা চলমান কর্মসূচির মধ্যে অতর্কিতে প্রবেশ করে আমাদের এক ছাত্রনেতাকে বিবস্ত্র করে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল ও ঘৃণিত-ধিকৃত একটি ঘটনা। বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি থেকে ছাত্রদল সভাপতি মিজানুর রহমান রাজকে পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা গ্রেফতার করে এবং কর্মসূচি পণ্ড করে দেয়। আমাদের এই ছাত্রনেতা পেটোয়া বাহিনীর হাত থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য আমাকে এসে জড়িয়ে ধরেছিল। আমার ব্যথাটা এখানেই যে, আমি তাকে রক্ষা করতে পারিনি।’ সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতায় যদি যেতে চান, তাহলে আপনাদের অবশ্যই সব রাজবন্দীকে মুক্তি দিতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। জনগণের সব অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। যে নির্বাচন পরিচালনা করবে একটি নিরপেক্ষ সরকার। তাহলেই আপনাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, অন্যথায় নেই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর