শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

ছয় বছর পর পাকিস্তানে মালালা

ছয় বছর পর পাকিস্তানে মালালা

তালেবান জঙ্গিদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ছয় বছর পর গতকাল প্রথমবারের মতো নিজের দেশে ফিরেছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী পাকিস্তানি তরুণী মালালা ইউসুফজাই। সূত্র : বিবিসি। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, নিরাপত্তার কারণে মালালার বিস্তারিত সফরসূচি গোপন রেখেছেন পাকিস্তানি কর্মকর্তারা। তবে জানা গেছে, দেশে ফেরার পর পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসির সঙ্গে তিনি প্রথম সাক্ষাৎ করেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সম্প্রচারবিষয়ক মন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব, তথ্য-প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী আনুশা রেহমান এবং মারভি  মেমন। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, মালালা দেশে আসছেন বলে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা ছিল না। নিরাপত্তাজনিত কারণে তার দেশে ফেরার কথা গোপন রাখা হয়েছিল। মালালা, তার পরিবার এবং মালালা ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা দুবাই হয়ে ইসলামাবাদ আসেন। বার্মিংহাম থেকে দুবাইয়ে অন্য একটি ফ্লাইটে এসেছিলেন তারা। আগামী ২ এপ্রিল পর্যন্ত মালালার পাকিস্তানে থাকার কথা। সূত্র জানায়, পাকিস্তানে অবস্থানকালে দেশটির স্বল্পোন্নত এলাকাগুলোতে শিক্ষার প্রসার নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মালালার আলোচনা করার কথা রয়েছে। তবে মালালা তার জন্মশহর সোয়াটে যাবেন কিনা— সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। উল্লেখ্য, নারী শিক্ষার অধিকার নিয়ে সোচ্চার ভূমিকার কারণে ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর মালালাকে গুলি করে তালেবানরা। মাথায় গুলি লাগলেও অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। মালালার বয়স ছিল তখন ১৪ বছর। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার এক হাসপাতালে মাথায় অস্ত্রোপচারের পর সেরে ওঠেন মালালা। কিন্তু এই ঘটনা সারা বিশ্বে তার নতুন পরিচিতি তৈরি করে। ২০১৪ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। বর্তমানে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন মালালা। যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর গতকাল রাত দেড়টার দিকে প্রথমবারের মতো দেশে ফিরেন ২০ বছর বয়সী এই শিক্ষা অধিকারকর্মী। ‘ভয়ডরহীন পরিবেশে প্রত্যেক বালিকা পড়তে ও নেতৃত্ব দিতে পারবে’ এমন বিশ্ব গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন মালালা। বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন তিনি। প্রসঙ্গত, এতদিন পাকিস্তানে ফিরতে না পারলেও মালালা যুক্তরাজ্যে থেকে তার লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, জর্ডান, সিরিয়া ও কেনিয়ার মেয়েদের শিক্ষার সহায়তায় বাবা জিয়াউদ্দিন ইউসুফজাইকে সঙ্গে নিয়ে গঠন করেন মালালা ফান্ড। শিশু ও তরুণদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৪ সালে ভারতের শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান মালালা। সবচেয়ে কম বয়সে নোবেল পাওয়া ব্যক্তি তিনিই।

সর্বশেষ খবর