শুক্রবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

সুষ্ঠু পরীক্ষা সমন্বিত প্রচেষ্টার ফল

আকতারুজ্জামান

সুষ্ঠু পরীক্ষা সমন্বিত প্রচেষ্টার ফল

নুরুল ইসলাম নাহিদ

পাবলিক পরীক্ষা এক বড় কর্মযজ্ঞ। সারা দেশে একযোগে এসব পরীক্ষা নেওয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে এ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা, সমন্বিত প্রচেষ্টা। চলমান পাবলিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার ফল। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ছাড়াই এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে গতকাল এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, প্রশ্ন ফাঁস ভয়ানক ব্যাধি। এ ব্যাধি মাদকের চেয়েও ভয়ঙ্কর। আজকের ছাত্রছাত্রীরা যদি প্রশ্ন ফাঁসের খপ্পরে পড়ে তাহলে আমাদের তরুণ প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। আর তরুণ প্রজন্ম ধ্বংস হলে আগামীর বাংলাদেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে। কারণ, আজকের তরুণ প্রজন্মই আগামীর বাংলাদেশ গড়বে।

প্রশ্ন ফাঁস করা বড় রকমের দুর্নীতি। এ দুর্নীতি রোধ করতে হলে আমাদের সবার সচেতন থাকতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে বড় পরিবার। কোটি কোটি মানুষ এ শিক্ষা পরিবারের সঙ্গে জড়িত। পাবলিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নিতে সবার দায়িত্ব রয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অভিভাবকদের বলব, আপনারা সন্তানদের অনৈতিক সুবিধা দিতে ভুয়া প্রশ্নের পেছনে ছুটবেন না। এতে সময়, শ্রম, অর্থ সবই অপচয় হবে। এমন করলে অভিভাবকরা নিজেরাই সন্তানদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করবেন। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। দুর্নীতি করে পরীক্ষায় ভালো করার চিন্তায় থাকলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেকে ভুয়া প্রশ্ন দিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এরা অন্যায় করছে। এদের আইনের হাতে সোপর্দ করা সবার দায়িত্ব। তিনি বলেন, সবার সহযোগিতার ফলেই সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। সবার কাছে আহ্বান, আপনারা এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখুন। এ ছাড়া সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শেষ করা সম্ভব নয়। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়াই পরীক্ষা শেষ হলে এ কৃতিত্ব সবার। নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করতে সবার পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে আমরা নানা ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরিবহন, বিতরণসহ সকল পর্যায়ে আনা হয়েছে কড়া সতর্কতা ও নিরাপত্তাব্যবস্থা। কত সেট প্রশ্ন প্রণয়ন করা হবে তাও আমরা প্রকাশ করিনি। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেটকোড নির্ধারণ করা হচ্ছে। সারা দেশের কেন্দ্রগুলোয় পরীক্ষার দিন সকালে ট্রেজারি থেকে পরীক্ষার প্রশ্ন সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ট্রেজারির নিকটবর্তী কেন্দ্রগুলোয় পরীক্ষার কিছু সময় আগে প্রশ্ন সংগ্রহ করছে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নম্বরে সেটকোড ব্যবহারের নির্দেশনার এসএমএস যাওয়ার পর প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে পারছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। প্রশ্নপত্রের সব প্যাকেট থাকছে সিরিউরিটি টেপে মোড়ানো। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে নিতে আমরা আমাদের চেষ্টার কমতি রাখিনি। এখন প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। যা মানুষের পক্ষে সম্ভব তার সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে পরীক্ষা উপলক্ষ করে। পরীক্ষায় কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড় দেবে না।

 আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন দফতর আমাদের সহায়তা করছে। পরীক্ষা চলাকালে যে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক লেনদেন মনিটরিং করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মোবাইল ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য মনিটরিং করা হচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা করলে কেউ পার পাবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর