শুক্রবার, ৪ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে আমন্ত্রণের সুযোগ নেই : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে আমন্ত্রণের সুযোগ নেই : কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।

গতকাল সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আমন্ত্রণ সম্পর্কে বিএনপির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘গতবার তাদের প্রস্তাব করা হয়েছিল। তখন শুধু সরকারে অংশগ্রহণ নয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ও বিএনপিকে অফার করা হয়েছিল। এখানে গোপনীয়তার কিছু ছিল না। পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী দল হিসেবে তখন এ প্রস্তাব করা হয়েছিল। এবার পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী দল নয়— এমন কাউকে আমন্ত্রণ জানানোর কোনো চিন্তা-ভাবনা সরকারের নেই। সংবিধানে এমন কোনো সুযোগ আছে বলেও আমার জানা নেই।’ বিএনপি নির্বাচনে না এলে আওয়ামী লীগ এককভাবে নির্বাচন করবে কিনা— এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কত দল আছে ইলেকশনে অংশগ্রহণ করবে, একক হবে কেন? স্বীকার করি, বিএনপি অবশ্যই একটা বড় দল। না এলে জোর করে আনব নাকি?’ পাল্টা প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনটা তাদের অধিকার, এটা কি সরকারের দয়ার দান? ডেকে আনতে হবে কেন? বেগম জিয়া কারাগারে আছেন, তাকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে আসবেন কি আসবেন না— এটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।’

খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না— বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবে নির্বাচন হবে। প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে, এ প্রক্রিয়া থেমে থাকবে না। বিএনপি আসবে না বলে নির্বাচনের ট্রেন থেমে যাবে—এটা চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।’ তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারেক রহমান দণ্ডপ্রাপ্ত, তাই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি সরকারের তাগিদে আছে। বিএনপি নেতারা কী চান? বিএনপি কি চায় তারেক রহমান দেশে ফিরে আসুক? তাদের গডফাদাররা এক রকম, সিনিয়র নেতারা আরেক রকম। তারা একে অন্যকে সরকারের এজেন্ট বলে— এটাও তো আমরা জানি, তাদের নিজেদেরও তো ঠিক নেই। তারেক রহমান প্রশ্নে তাদের মধ্যে সমস্যা আছে, সেটা সবাই জানে, এ নিয়ে আর কথা বলতে চাই না।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার মনে হয়, নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচন কমিশনের আওতায় পড়ে না। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপির যে অভিযোগ, তা ইসির এখতিয়ারে নেই।’ বিএনপির নির্বাচন প্রতিহত করার হুমকির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে তারা সারা দেশে তাণ্ডব সৃষ্টি করেছে, মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, সরকারি অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে, ট্রেনের ফিশপ্লেট খুলে ফেলেছে, হাজার হাজার গাছ কেটেছে, পাঁচ শতাধিক স্কুল পুড়িয়েছে, তাতে কি গণতন্ত্র রক্ষা করা হয়েছে, নাকি নির্বাচন ঠেকানো গেছে? নির্বাচন হয়ে গেছে। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে গেলে বাংলাদেশের মানুষ সাড়া দেবে না। মানুষ বুঝবে বিএনপি সন্ত্রাসী পথ এখনো ছাড়েনি। যে কারণে কানাডার আদালত সন্ত্রাসী দল হিসেবে তাদের আখ্যা দিয়েছে।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন সত্যি কথা স্পষ্ট করে বলেন, তখন বিএনপির কেন গাত্রদাহ শুরু হয় জানি। বিএনপি দুর্নীতিবাজ ও দণ্ড পাওয়াদের নেতা বানাতে তারা তাদের গঠনতন্ত্র থেকে রাতের আঁধারে ৭ ধারা তুলে নিয়েছে। খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের ১০ দিন আগে গঠনতন্ত্র থেকে ৭ নম্বর ধারা বাদ দিয়ে আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে নিজেরাই নিজেদের প্রকাশ করেছে। তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, সেই সত্যের মুখোমুখি হতে তাদের হবে। কারণ, তারাই সেই ভয় ও ভীতির কারণ সৃষ্টি করেছেন। নিজেরাই নিজেদের ফাঁদে পড়েছেন। দুর্নীতিবাজ দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান করেছেন।’

সর্বশেষ খবর