শুক্রবার, ৪ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক সংকটের সমাধান ছাড়া জনগণ নির্বাচন মানবে না

----- মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক সংকট সমাধান ছাড়া কোনো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘যে সমস্যা আছে, সেই সংকটের সমাধান করেন। তারপর নির্বাচনে যান। কিছুই না করে যদি নির্বাচনে যান তাহলে নির্বাচন কী হবে? যা হওয়ার তাই হবে। যেটা করেছেন  ২০১৪ সালে তাই হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এভাবে তো এবার নির্বাচন হবে না। এবার এ দেশের মানুষ এই ধরনের নির্বাচন মেনে নেবে না- এটা পরিষ্কার। কতবার জেলে দেবেন, কতজনকে মারবেন, কতজনকে গুম করবেন। এবার এই ধরনের নির্বাচন এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না।’ গতকাল ‘মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০১৮’ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিএনপি সমর্থিত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের  সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও ডিইউজে সহসভাপতি শাহিন হাসনাতের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, বিএফইউজের সহসভাপতি মো. মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান।

 মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন সম্পর্কে খুব স্পষ্ট কথা বলতে চাই, নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে নির্বাচন দেখাশোনার জন্য। আর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সব দলকে সব সুযোগ দিতে হবে। আমরা অবিলম্বে  দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনে একটা বৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে হটিয়ে অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলো। তারা এই নির্বাচন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। এই আওয়ামী লীগ কাদের প্রতিনিধিত্ব করছে? ওই ১/১১ প্রতিনিধিত্ব করছে। ওই সময়ে উনারা (আওয়ামী লীগ) আমাদের আন্দোলনের ফসল বলেছিল।’ গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘কালকে রাতেও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজকে সারা শহরে পুলিশ দিয়ে দিয়েছে, খুলনার বাইরের কেউ সেখানে গেলে তাকে ধরা হবে। গাজীপুরে প্রথম দিন আমরা বলেছি যে, এসপিকে সরাতে হবে। এই এসপি হচ্ছে চিহ্নিত আওয়ামী লীগ। এখানে কোথায় গণতন্ত্র, কিসের নির্বাচন। সরকার এমন একটা মেরুদণ্ডবিহীন নির্বাচন কমিশন তৈরি করেছে। আমি যখন তাদের ফোন করি তারা বললেন না না সব ঠিক আছে। কী ঠিক আছে?’ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে হবে। গণতন্ত্রের পক্ষের সব শক্তিকে আমাদের একত্রিত করতে হবে- এটাই বাংলাদেশের ইতিহাস। এটা যদি আমরা করতে পারি তাহলে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, আমরা বিজয় লাভ করব। সে জন্য আবারও আহ্বান করছি, সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। একটি বিষয় নিয়ে এই আন্দোলন-সংগ্রামকে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে হবে তা হচ্ছে গণতন্ত্রকে মুক্ত করার সংগ্রাম।’

সর্বশেষ খবর