শুক্রবার, ৪ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডিআইজি মিজানকে দুদকে আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবৈধ সম্পদের তথ্য ও আয়কর ফাঁকির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তথ্য দাখিল করেছেন বহুল আলোচিত পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান। দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হলে গতকাল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।

জিজ্ঞাসাবাদের পর দুদক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ডিআইজি মিজান। এ সময় তিনি বলেন, আমার সম্পদের ব্যাপারে দুদকে কর্মকর্তারা দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন। ট্যাক্স ফাইলের বাইরে আমার আর কোনো সম্পদ

নেই। বাকিটুকু আপনারা তদন্ত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। স্বজনদের নামে থাকা সম্পদের ব্যাপারে তিনি বলেন, তাদের সবার ট্যাক্স ফাইল আছে। এর বাইরে আমি কিছু বলব না। নারীঘটিত অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ অভিযোগের তদন্ত চলছে। তারাই বলতে পারবেন, কতটুকু প্রমাণিত হয়েছে কতটুকু প্রমাণিত হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি মিজান বলেন, এক নারী সাংবাদিকের সঙ্গে আমার কনভারসেশন (কথোপকথন) হয়েছে। এ জন্য আমি সরি। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। মৌলভীবাজারে পুলিশ লাইনের পেছনে ইকোপার্কের জমি দখল করে আপনার নামে বাগানবাড়ি করার অভিযোগ আছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জবাব দিয়েছি। তারা সত্যাসত্য যাচাই করে দেখবেন।  এদিকে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে ডিআইজি মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে দুদকের সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন বলেন, আমাদের কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনি তার পক্ষে কিছু কাগজপত্র দাখিল করেছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদ থাকার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, তার অর্জিত সম্পদের পরিমাণ জ্ঞাত আয়ের বাইরে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আগামী রবিবার তিনি আরও কিছু কাগজপত্র জমা দেবেন। সেগুলোও যাচাই-বাছাই করা হবে।  দুদক সূত্রে জানা গেছে, ডিআইজি মিজান ক্ষমতার অপব্যবহার করে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার নামে-বেনামে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে। একাধিক ব্যাংক হিসাবে রয়েছে বিপুল অর্থ ও ফিক্সড ডিপোজিট। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ডিআইজি মিজান পুলিশের উচ্চ পদে থেকে তদবির, নিয়োগ, বদলিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে নানা উপায়ে বিপুল অর্থের মালিক হন বলে দুদকে অভিযোগ আসে। এ অভিযোগ যাচাই শেষে অনুসন্ধানের জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে দুদক অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করেছে। 

সর্বশেষ খবর