রবিবার, ১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
মাঠের নেতাদের প্রধানমন্ত্রী

ভোটের আগে দ্বন্দ্ব মেটান

♦ অন্যদলের নেতাদের টানাটানি না করে নতুন কর্মী সৃষ্টি করুন
♦ ঘরে ঘরে গিয়ে উন্নয়নের কথা তুলে ধরুন
♦ প্রতিটি গ্রামকে শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই
♦ তৃণমূলের মতামতে মনোনয়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটের আগে দ্বন্দ্ব মেটান

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দলীয় কোন্দল মেটাতে দলের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন। সেখানে যেন কোনো ধরনের দলীয় কোন্দল না হয়। যেসব ইউনিয়নে দ্বন্দ্ব আছে, তা খুব দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

গতকাল দুপুরে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ইউনিয়ন নেতাদের বলেন, যারা আমাদের নেতা-কর্মীদের হত্যা ও নির্যাতন করেছে, নিজেদের লোক করতে গিয়ে তাদেরকে টানাটানি না করে, নতুন কর্মী সৃষ্টি করেন। সরকারের উন্নয়নগুলো ঘরে ঘরে গিয়ে জনগণকে জানান। সোয়া এক ঘণ্টার বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী সরকারের উন্নয়ন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস, নিজের সংগ্রাম এবং আগামীতে করণীয় কী এসব তুলে ধরেন। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। তৃণমূল নেতাদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, ঝালকাঠি জেলার কৃত্তিপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শঙ্কর মুখার্জি, বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খো কো মারমা, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমির আলী, সুনামগঞ্জের মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত তালুকদার, সদর উপজেলার সাদুল্ল্যাহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস, বরিশাল মহানগরের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফারুক হুমায়ুন। বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের প্রতিজ্ঞা নেওয়ারও আহ্বান জানান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে। কাজেই এই দলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তৃণমূলের মানুষের কাছে দলের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে এর জনপ্রিয়তা বাড়াতে হবে। আমরা কী করেছি এবং কী করতে চাচ্ছি তা জনগণের সামনে তুলে ধরে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইতে হবে। স্বজন হারাবার বেদনা স্মরণ করে আওয়ামী লীগকে নিজের পরিবার হিসেবে আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলাই আমার একমাত্র স্বপ্ন। আর আপনারা হচ্ছেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের এক একজন কারিগর। তৃণমূলকে নিজ নিজ এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই দেশ কখনো পিছিয়ে থাকতে পারে না। তবে স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, জাতির পিতার খুনিদেরকে বিচারের হাত থেকে রেহাই দানকারী, তাদের লালন-পালনকারী, দুর্নীতি, মাদক সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত; এই সমস্ত গোষ্ঠী যেন আর কোনোদিন বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেটা আপনাদের দেখতে হবে। তিনি বলেন, নৌকা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকা দারিদ্র্যমুক্ত করে যাচ্ছে। নৌকা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিচ্ছে। আমাদের উন্নয়নের কথাগুলো আপনারা প্রতি গ্রামে, প্রতি ঘরে পৌঁছে দেবেন। শেখ হাসিনা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের প্রশংসা করে বলেন, উচ্চপর্যায়ের নেতারা মাঝে মাঝে কিছু ভুল করে, এটা নতুন কিছু না। অভিজ্ঞতা আছে বলেই আমি বলি। বাবা (বঙ্গবন্ধু) যখন ছয় দফা দিয়ে গেল, তখন আট দফা নিয়ে আসল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। পূর্ব বাংলার আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা তখন বলল বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দিয়েছেন, ছয় দফা ছাড়া আমরা কিছু মানি না। বাংলাদেশে এরকম বহুবার দেখেছি। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সব সময় ঐক্যবদ্ধ ছিল বলেই বাধ্য হলো ইলেকশন দিতে। আর সেই ইলেকশনে বিপুল ভোটে আমরা জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলাম। আমাদের শক্তি হলো এই দেশের জনগণ। আমাদের শক্তি হচ্ছে আমাদের সংগঠন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর